গর্বিত শিল্পীরা। —নিজস্ব চিত্র।
‘‘ধীর গতিতে গাড়ি চালাও ভাই / সরকারের নির্দেশিকা মেনে দুর্ঘটনা এড়াও / নির্মল বাংলা গড়ব এটাই হবে অঙ্গীকার / সব বাড়িতে বানানো চাই শৌচাগার।’’
বসিরহাট মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে লোক গানের সুরে বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে শোনা যাবে এই গান ।
বছর পাঁচ-ছয় আগে পর্যন্তও পুজোর অ্যালবাম ছিল বাংলা গানে রীতিমতো চর্চিত বিষয়। তবে আলাদা করে পুজোর অ্যালবামের সংখ্যা এখন হাতেগোনা। সেই অনুভূতিকে মূলধন করেই লোকশিল্পীদের দিয়ে পুজোর গানের অ্যালবাম বের করার উদ্যোগ করেছিল প্রশাসন। গায়কদের কেউ চাষি, কেউ বাঁধেন ঝুড়ি, কেউ আবার ঠিকা কর্মী।
বসিরহাটের জিরাকপুরের শিল্পী নরেশ সরকার স্থানীয় বিডিও অফিসে ঠিকাকর্মীর কাজ করেন। ভাটিয়ালি সুরে তিনি ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ নিয়ে গান বেঁধেছেন। বসিরহাটের পানিগোবরা গ্রামের আনোয়ার আলি ঝুঁড়ি বেঁধে, আম চাষ করে সংসার চালান। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা আনোয়ার ফকিরি ঘরানার গান বাঁধেন। বাদুড়িয়ার রামচন্দ্রপুরের প্রান্তিক দাসও ঝুঁড়ি বেঁধে সংসার চালান। বছর তিরিশের প্রান্তিক সুযোগ পেলেই গান বাঁধেন। তাঁর কথায়, ‘‘ছোট থেকেই গান গাওয়া আমার নেশা। তবে পরিবারের অনেকেই আমার গান গাওয়া পছন্দ করতেন না।’’ এই তিন জনের সুরেই সাজানো হয়েছে মূল গানটি। মাঝে থাকছে ভাষ্যপাঠ। ভাষ্যপাঠ করেছে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী গার্গী বন্দ্যোপাধ্যায়। যন্ত্রসঙ্গীতে রয়েছেন শিবনারায়ণ হালদার, সুশীতল ধাবক, রাজশেখর রায়চৌধুরী, সুব্রত নট্ট। সুর দিয়েছেন শৈলেন ঘোষ। তাঁদের গান মণ্ডপে বাজছে, এটা বিশ্বাসই করতে পারছেন না ওই তিন শিল্পী। তাঁদের একটাই কথা, ‘‘আমাদের মতো দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের গান বাজবে পুজো মণ্ডপে! দূরতম কল্পনাতেও এ কথা কখনও ভাবিনি।’’
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার ১০টি ব্লক এবং ৩টি পুরসভা এলাকার সব ক’টি পুজো মণ্ডপে বাজানোর জন্য ওই অ্যালবামের সিডি দেওয়া হচ্ছে। সিডির মূল লক্ষ্য হল জনমানসে সচেতনতা তৈরি। বসিরহাট মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কর্তা প্রদীপ্ত আচার্য বলেন, ‘‘তিন জন শিল্পীর গান শ্রোতাদের আনন্দ দেবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’ মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি জানান, নির্মল বাংলা, সেভ ড্রাইভ সেফ লাইভ এবং জনপরিষেবা আইন নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেই শারদীয়া গানের সিডিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy