চাকরি হারানোর ভয়ে অধ্যক্ষকে প্রায় চার ঘণ্টা তালাবন্দি করে রাখলেন অস্থায়ী শিক্ষকেরা। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ঢোলাহাট কলেজে। পরে বিডিও এবং স্থানীয় বিধায়কের প্রতিনিধি গিয়ে অধ্যক্ষের ঘরের তালা খোলেন।
ঢোলাহাট কলেজের সমস্যা দীর্ঘদিনের। পর্যাপ্ত টাকা না থাকা এবং দীর্ঘদিন ধরে অডিট না হওয়ার কারণে একের পর এক ঝামেলা লেগে রয়েছে কলেজে। জনা চোদ্দো অস্থায়ী শিক্ষক পাঁচ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কেউ সাড়ে তিন হাজার, কেউ দু’হাজার টাকায় কাজ করেন এখানে। অনেকে সাত বছর ধরেও পড়াচ্ছেন এখানে। কিন্তু কলেজের ফান্ড না থাকায় ওই শিক্ষকদের আর কাজে রাখা যাবে না বলেও এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। মেহবুব আলম পিয়াদা নামে এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘আমরা কলেজের টাকার সমস্যা বুঝেই এ ক’মাস চালিয়েছি। সহযোগিতা করেছি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। কিন্তু দীর্ঘদিন কাজ করার পরে এ ভাবে কাজ থেকে অব্যাহতি দিলে আমরা কোথায় যাব?’’ কলেজের মোট ২২ জন অধ্যাপকের মধ্যে ১৪ জনই অস্থায়ী। মূলত তাঁদের ভরসাতেই চলছে পঠনপাঠন। তাই শিক্ষকদের আন্দোলন সমর্থন করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। সে কারণে তাঁদের কেউ কেউ এ দিন কলেজে উপস্থিতি থাকলেও অধ্যক্ষকে মুক্ত করার জন্য সচেষ্ট হননি। অধ্যক্ষের বক্তব্য, কলেজের তহবিল শেষ। বিধায়কের কাছে, সাংসদের কাছে দরবার করেও টাকা মিলছে না। ছাত্রদের দেওয়া মাইনের ৫০ শতাংশ টাকা সরকারকে দিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুদানও মেলে না কলেজে। মুক্ত হওয়ার পরে অধ্যক্ষ বিশ্বরূপবাবু বলেন, ‘‘যাবতীয় চাপ আমার উপরেই এসে পড়ছে। কেউ দায়িত্ব নেবে না। কোথা থেকে শিক্ষকদের মাইনে দেবো? এ রকম চলতে থাকলে আমি পদত্যাগ করব।’’ কলেজ পরিচালন সমিতির সরকারি প্রতিনিধি তথা কুলপির তৃণমূল বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার বলেন, ‘‘তহবিল জোগাড় করতে হবে অধ্যক্ষকেই। উনি কাজ করতে চান না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’
এ দিন ঘটনার খবর পেয়ে ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসকের নির্দেশে গিয়ে মধ্যস্থতা করে অধ্যক্ষকে মুক্ত করেন কুলপির বিডিও সঞ্জীব সেন। ঠিক হয়েছে, আপাতত সকলকে নিয়ে একটি বৈঠক করে শিক্ষকদের চাকরি এবং কলেজের অন্য বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে সমাধানসূত্র বের করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy