Advertisement
১৬ অক্টোবর ২০২৪
one rupee school

জোগাড়ের কাজ করে কুলতলির পুলক খুলেছেন ‘এক টাকার পাঠশালা’

২০১৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন পুলক। ইচ্ছা থাকলেও কলেজে ভর্তি হওয়া হয়নি। সংসার চালাতে ঢুকে পড়েন কাজে।

পুলকের পাঠশালায় পড়ুয়ারা।

পুলকের পাঠশালায় পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলতলি  শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৩১
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিকের বেশি পড়াশোনা এগোয়নি। সংসার টানতে শুরু করেছিলেন রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ। সেই কাজ করেই এলাকার শিশুদের পড়াতে স্কুল খুলেছেন কুলতলির দেউলবাড়ির বাসিন্দা পুলক মণ্ডল। পড়ুয়া পিছু দিনে এক টাকা করে নিয়ে গত দু’বছর ধরে চলছে স্কুল। পোশাকি নাম, স্বামীজি শিশু পাঠশালা। তবে এলাকায় ‘এক টাকার পাঠশালা’ নামেই পরিচিত এই স্কুল।

২০১৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন পুলক। ইচ্ছা থাকলেও কলেজে ভর্তি হওয়া হয়নি। সংসার চালাতে ঢুকে পড়েন কাজে। স্কুলে পড়াকালীনই এলাকার শিশুদের পাশে দাঁড়ানো শুরু। লকডাউনে সেই কাজ আরও বাড়ে। এলাকার প্রচুর শিশুকে বই-খাতা দিয়ে সাহায্য শুরু করেন তিনি। কিন্তু বুঝতে পারেন, শুধু বই-খাতা দিয়ে শিশুদের পড়াশোনায় মন বসানো যাবে না। সিদ্ধান্ত নেন, স্কুল খোলার। নিজের আনাজ খেতের এক কোণে দরমার বেড়া দিয়ে তৈরি করেন পাঠশালা। ২০২১ সালে কুড়িজনকে নিয়ে পথচলা শুরু পাঠশালার। কলেজ পড়ুয়া দুই বোনকে পড়ানোর দায়িত্ব দেন পুলক।

প্রাথমিক ভাবে নিজের খরচেই শুরু করেছিলেন। পরে ইয়াসে ত্রাণ দিতে কিছু সংস্থা আসে এলাকায়। পুলকের উদ্যোগের কথা শুনে তারাও পাশে দাঁড়ায়। বর্তমানে পাঠশালার পড়ুয়া সংখ্যা পঞ্চাশের কাছাকাছি। শিক্ষক তিন জন। মূলত সরকারি স্কুলের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণিতে পাঠরত পড়ুয়াদেরই সাহায্য করা হয় এই পাঠশালায়। পড়ুয়াদের বই, খাতা, নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বছরে দু’বার নতুন পোশাকও দেওয়া হয়।

পুলক জানান, দিনে এক টাকা করে বছরে ৩৬৫ টাকা করে নেওয়া হয় প্রতি পড়ুয়াদের কাছ থেকে। তবে টাকা দেওয়া নিয়ে কোনও জোরাজুরি করা হয় না। কেউ সেটুকুও দিতে না পারলে অসুবিধা নেই।

বছর পঁচিশের পুলক ইদানীং অসুস্থ। চিকিৎসা চলছে। ভারী কাজকর্ম তেমন করতে পারেন না। তবু স্কুল বন্ধ হতে দেননি। তাঁর কথায়, "স্কুল ঘিরে অনেক স্বপ্ন। অনেকে পাশে দাঁড়িয়েছেন। সকলের সাহায্য নিয়ে ছেলেমেয়েগুলোর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই।"

অন্য বিষয়গুলি:

Kultoli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE