Advertisement
E-Paper

জল পেরিয়ে ক্লাসে যাচ্ছে পড়ুয়ার দল

স্কুলের সামনে রয়েছে সরকারি জলের একটি কল। কিন্তু নিকাশি না থাকায় সেই জল জমে স্কুলের সামনেই। জমা জল পচে ছড়ায় দুর্গন্ধ। তার মধ্যে দিয়েই স্কুল পড়ুয়াদের যাতায়াত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫১
দুর্গতি: এ ভাবেই স্কুলে যাতায়াত করতে হয় ছেলেমেয়েদের। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

দুর্গতি: এ ভাবেই স্কুলে যাতায়াত করতে হয় ছেলেমেয়েদের। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

এমনিতেই নিচু জায়গা। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে। তবে শুধু বর্ষাকালেই নয়, প্রায় সারা বছরই কাদা-জলে একাকার হয়ে থাকে এলাকা।

সেখানেই রয়েছে একটি স্কুল। তার সামনে রয়েছে সরকারি জলের একটি কল। কিন্তু নিকাশি না থাকায় সেই জল জমে স্কুলের সামনেই। জমা জল পচে ছড়ায় দুর্গন্ধ। তার মধ্যে দিয়েই স্কুল পড়ুয়াদের যাতায়াত।

গত বছর অজানা জ্বর আর ডেঙ্গি ছড়িয়েছিল এলাকায়। অনেকের মৃত্যু হয়। এ বার আগে থেকেই সতর্কতা নিতে নির্দেশ আছে সরকারের। তবু স্কুলের সামনের ওই জমা জলে এখনও চুন বা ব্লিচিং না ছড়ানো হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে মশাবাহিত রোগের আতঙ্কেও ভুগছেন ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকেরা। অবিলম্বে জমা জল পরিষ্কার এবং নিকাশিনালা তৈরির আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।

দেগঙ্গা বাজারের কাছেই ‘দেগঙ্গা আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নামে ওই স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, গেটের সামনে জমে রয়েছে পচা জল। তা মাড়িয়েই স্কুলে ঢুকতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। কথিকা চৌধুরী নামে এক ছাত্রী বলে, ‘‘জল না মাড়িয়ে স্কুলে ঢোকা যায় না। এ দিকে ওই জল ঘাঁটলেই পা চুলকায়।’’ আর এক ছাত্রী সুস্মিতা কর্মকারের কথায়, ‘‘ভয়ে ভয়ে জল পার হই। লাফিয়ে পার হতে গিয়ে অনেকেই পড়ে চোট পেয়েছে।’’ প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষোভও দেখিয়েছেন অভিভাবকেরা। কিন্তু সুরাহা হয়নি। পাপিয়া দাস নামে এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘‘কয়েক মাস ধরে জল জমে আছে। পচে দুর্গন্ধ ছড়ানো জল মাড়িয়ে স্কুলে ঢুকতে হচ্ছে বাচ্চাদের।’’ রিঙ্কি পাল নামে আর একজনের কথায়, ‘‘নোংরা জল পায়ে লেগে চর্মরোগ হচ্ছে। গতবারও এই এলাকায় অজানা জ্বর ও ডেঙ্গিতে অনেকে মারা গিয়েছেন। মশার আতঙ্কে স্কুলে বাচ্চাকে পাঠাতেই ভয় হয়।’’

প্রধান শিক্ষক অরূপ মৈত্রের বক্তব্য, ‘‘স্কুলের সামনে সরকারি কল বসানো হলেও তার জল যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই স্কুলের সামনে জল জমছে। পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও, বিদ্যালয় পরিদর্শককে ছবি-সহ বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’

ঘটনার কথা স্বীকার করে দেগঙ্গার বিদ্যালয় পরিদর্শক শানওয়াজ আলম বলেন, ‘‘অভিযোগটা প্রায় এক বছরের পুরনো। পরিদর্শনেও গিয়েছি। বর্তমান অবস্থা আরও উদ্বেগজনক। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করা হবে।’’দেগঙ্গার বিডিও অনিন্দ্য ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। নিকাশিনালার জন্য যদি সমস্যা হয়ে থাকে তবে শীঘ্রই সমাধান করা হবে।’’ স্থায়ী সমাধানই তো কাম্য। কিন্তু যত দিন সেটা না হচ্ছে তত দিন অন্তত নোংরা জমা জলে পঞ্চায়েত থেকে চুন, ব্লিচিং ছড়ানো হোক— এমনই দাবি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের। সেটুকুও হচ্ছে না বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন তাঁরা।

এ ব্যাপারে দেগঙ্গা ১ পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুর রউবের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘জনসাধারণের চেতনার অভাবও রয়েছে। নর্দমার মধ্যে অবাধে আবর্জনা ফেলায় জল নিকাশি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ তবে দ্রুত চুন, ব্লিচিং ছড়ানোর পাশাপাশি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Student School School Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy