বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডেকে এনে এক তরুণী ও তার বন্ধুকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল প্রেমিক ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত যুবকেরা নারীপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাদুড়িয়ার পিয়াড়া গ্রামে। শুক্রবার বসিরহাটের এসডিপিও, সিআই এবং বাদুড়িয়ার ওসি বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। অভিযুক্ত সাদ্দাম মোল্লা, মনসুর শেখ, আমির আলি গাজি ওরফে ফুলু, সাজাহান মোল্লা, জাহাঙ্গীর মোল্লা এবং আখতার গাজি পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে এসে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। মেয়ে দুটি চিকিৎসাধীন।’’ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের দণ্ডিরহাট অনন্তপুর এলাকাতে বাড়ি বছর বাইশের ওই তরুণীর। একই এলাকাতে থাকেন তাঁর বান্ধবী। তিন মাস আগে মেয়েটির সঙ্গে পিয়াড়া গ্রামের সাদ্দামের মোবাইলে আলাপ হয়। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এ দিন বিকাল ৪টা নাগাদ ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধু সাদ্দামের সঙ্গে দেখা করতে ইছামতী সেতুর কাছে আসেন। সাদ্দাম প্রেমিকাকে বিয়ের রেজিস্ট্রির প্রস্তাব দেয়। মেয়েটি রাজি হয়ে যায়। রাত ৭টা নাগাদ তিনজনেই স্বরূপনগরের বাসে ওঠে। বাস পিয়াড়া পৌঁছাতেই বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার নাম করে সাদ্দাম দু’জনকে নিয়ে বাস থেকে নেমে যায়। সেখানে আরও কয়েকজন যুবক অপেক্ষা করছিল। অভিযোগ, রাত ১১টা নাগাদ সাদ্দাম ও তার বন্ধুরা দুই তরুণীকে পাশে একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পরে তারা মেয়েদুটির মোবাইল ও টাকা নিয়ে পালায়। ওই তরুণীর বান্ধবীর চিৎকার শুনে পাশের একটি ক্লাবের ছেলেরা এগিয়ে আসেন। একটি মেয়েকে তখন উদ্ধার করা গেলেও, অন্যজনকে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। ক্লাবের ছেলেরা গ্রামের আরও কয়েকজনকে নিয়ে খোঁজ শুরু করতে দুষ্কৃতীরা মেয়েটিকে ফেলে পালায়। ক্লাবের ছেলেরা দুটি মেয়েকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে রাখেন। পুলিশে অভিযোগ করেন মেয়েদুটি। নির্যাতিতা তরুণীদের একজন বলেন, ‘‘সাদ্দাম নিজেকে একজন ইটভাটার মালিকের ছেলে বলে পরিচয় দিয়েছিল। তার গাড়ি আছে, বড় বাড়ির ছেলে বলেছিল। বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আমরা মছলন্দপুরে সাদ্দামের মাসির বাড়িতে বিয়ে করতে যাচ্ছিলাম। মাঝরাস্তায় বাস থেকে নামিয়ে আমাদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’’
গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের অধিকাংশই নারী পাচারের কাজে জড়িত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাদ্দাম, সাজাহান, ফুলুরা প্রায়ই বাংলাদেশ থেকে মেয়েদের বিয়ের টোপ দিয়ে এ পারে আনে। পরে তাঁদের কলকাতায় বিক্রি করে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy