লম্বা লাইন: জলের জন্য অপেক্ষায়, গোসাবায়। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা Sourced by the ABP
দীর্ঘ দিন ধরেই গোসাবায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। ইদানীং তীব্র গরমে খালের জল শুকিয়ে গিয়ে এলাকায় পাইপ লাইনের জল সরবরাহ বন্ধ আছে। প্রত্যেক দিন জলের জন্য হাহাকার বাড়ছে এই দ্বীপে।
চার দিকে জলবেষ্টিত গোসাবার মূল ভূখণ্ডে ভূগর্ভস্থ পানীয় জলের স্তর না থাকায় এই এলাকার মানুষকে জলের সমস্যা ভোগ করতে হয় প্রায় সব সময়েই। ভূগর্ভস্থ জল না থাকায় খালের জল শোধন করে তা পাইপ লাইনের মাধ্যমে পাখিরালয়, রাঙাবেলিয়া, সোনাগাঁ, আরামপুর-সহ আশেপাশের এলাকায় সরবরাহ করা হয়। এখন তাপপ্রবাহের ফলে সেই জল পেতেও সমস্যা হচ্ছে। প্রত্যেক দিন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ট্যাঙ্কে করে গ্রামে জল পৌঁছে দিচ্ছে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা নেহাতই কম বলে অভিযোগ মানুষের।
সমস্যা সমাধানের জন্য কোনও স্থায়ী পদক্ষেপ করা হয়নি বলে জানালেন এলাকাবাসীর। মুখ্যমন্ত্রী যখন জলস্বপ্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার কথা বলছেন, তখন গোসাবা দ্বীপের দু’টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় তিরিশ হাজার মানুষ পানীয় জলের সঙ্কটে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সুকদেব মণ্ডল, চন্দন মাইতিরা জানান, এই দ্বীপে ভূগর্ভস্থ জল নেই। খালের জল শোধন করে দেওয়া হত, কিন্তু খাল শুকিয়ে যাওয়ায় তা বন্ধ। এলাকায় দু’একটি নলকূপ থেকে সামান্য যেটুকু জল উঠত, তা-ও এই গরমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ড্রামে করে যে জল গ্রামে দেওয়া হচ্ছে, তা যথেষ্ট নয়।
অসুবিধার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি কৈলাস বিশ্বাস। তিনি বলেন, “এমনিতেই এই দ্বীপের মানুষ জলকষ্টেভোগেন। তারপরে এই প্রচণ্ড গরম ও বৃষ্টি না হওয়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, যে খালের জল শোধন করে দেওয়া হত, তা শুকিয়ে গিয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিও হয়নি। খালটি কাটানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে সেখানে বেশি জল মজুত করা সম্ভব হয়। গোসাবার বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “এ নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্লক প্রশাসন ও পিএইচই-র আধিকারিকদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বিকল্প জলের জন্য পাশের বালি দ্বীপ থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল এখানে আনার পরিকল্পনা চলছে।”
ক্যানিং মহকুমা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিক প্রণবকুমার সাঁফুই বলেন, “বালি দ্বীপে ন’টি জায়গায় গভীর নলকূপ বসানো হবে। সেই নলকূপের জল পাম্প হাউসের মাধ্যমে পাইপ লাইনের সাহায্যে গোসাবা দ্বীপের মানুষকে জোগান দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দ্রুত এই প্রকল্পের জন্য দরপত্র-সহ বাকি প্রক্রিয়া শুরু হবে।” বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল জানান, আপাতত ড্রামে করে মোটর ভ্যানের সাহায্যে গ্রামে গ্রামে জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সমস্যা মেটানোই লক্ষ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy