E-Paper

ফের দুর্যোগের পূর্বাভাস, চিন্তা বাঁধ ও ফসলে

বাসিন্দারা জানান, বহু জায়গায় নদী বাঁধ দুর্বল। সামান্য দুর্যোগেই বাঁধ ভেঙে বানভাসি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৩৮
দুর্যোগের আশঙ্কায় সাগরের সমুদ্র সৈকতে মাইকে প্রচার সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের। রবিবার।

দুর্যোগের আশঙ্কায় সাগরের সমুদ্র সৈকতে মাইকে প্রচার সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

বঙ্গোপসাগরের তৈরি গভীর নিম্নচাপের জেরে আবার দুর্যোগের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে অবশ্য খবর, মঙ্গলবার রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়বে ঝড়। তবে এর জেরে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। বিশেষ করে উপকূল এলাকায় প্রভাব পড়তে পারে বেশি। দুর্যোগের খবরে ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। উত্তরে সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দারাও চিন্তায়।

বাসিন্দারা জানান, বহু জায়গায় নদী বাঁধ দুর্বল। সামান্য দুর্যোগেই বাঁধ ভেঙে বানভাসি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। সম্প্রতি কটালের সময় সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপে একাধিক নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসও নেমেছে কয়েক জায়গায়। দুর্যোগে সেই সব বাঁধের কী হবে তা ভেবে আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা।

পাশাপাশি, এই সময় মাঠে মাঠে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ঝড়বৃষ্টিতে ধান চাষের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। শীতের মুখে নানা ধরনের আনাজেরও চাষ হয়েছে। দুর্যোগে সেই আনাজ চাষেও ক্ষতি হতে পারে। প্রশাসনের তরফে ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও কৃষকদের দাবি, ধান এখনও পাকেনি, ফলে এই অবস্থায় ধান কেটে নিলে ফসল পাওয়া যাবে না। বাসন্তীর কৃষক সুবিদ আলি পিয়াদা বলেন, “ধানে সবে পাক ধরেছে। এখনও কাটার মত হয়নি। ফলে ঝড়ে ক্ষতি হলেও এখন কাটা যাবে না।”

এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। মঙ্গলবার থেকে সমুদ্রে যাওয়া বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে প্রশাসন। কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী বিজয় দাস বলেন, “এই সময়টায় সমুদ্রে যেতে না পারা মানে আমাদের জন্য বিশাল ক্ষতি। ইলিশের মরসুমে এক দিনের বিরতিও বড় ধাক্কা।” কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি জানান, প্রশাসনের নির্দেশ মেনে বেশিরভাগ ট্রলারই ইতিমধ্যেই উপকূলে ফিরে এসেছে, বাকিরাও সোমবারের মধ্যে ফিরে আসবে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মানুষকে সতর্ক করতে মাইক প্রচার করা হচ্ছে। সুন্দরবন পুলিশ জেলার বিভিন্ন উপকূল থানার পক্ষ থেকে রবিবার মাইকে লাগাতার প্রচার চালানো হয়। মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। নদী বাঁধগুলিতে নজরদারি চালানো হচ্ছে। ফ্লাড শেল্টারগুলিকে তৈরি রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্লকে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।

সাগরের বিডিও কানাইয়াকুমার রায় বলেন, “গঙ্গাসাগর সৈকতে সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা মাইকে প্রচার করছেন, যাতে কেউ সমুদ্রে না নামেন। আমরা সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।” বাসন্তীর বিডিও সঞ্জীব সরকার বলেন, “পুরো বিষয়ের উপর নজর রাখা হচ্ছে।”

সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “সুন্দরবন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের আংশিক প্রভাব পড়তে পারে। তবুও প্রশাসন পুরোপুরি প্রস্তুত। নদী বাঁধে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। উপকূলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানোর ব্যবস্থাও করে রাখা হয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

South 24 Parganas

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy