এই হাল হয়েছে রাস্তার। —নিজস্ব চিত্র।
ট্রেন ধরতে গেলে জল জমা রাস্তার গর্তে পড়ে কারও হাত ভাঙছে, কারও পা। আবার কাউকে এক হাঁটু নোংরা জলের মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে হাবুডুবু খেতে হচ্ছে। জল থই থই হাড়োয়া স্টেশন রোডের এমনই অবস্থা। যাত্রীরা পড়েছেন মহা বিপদে। সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হওয়ার লক্ষণ নেই।
দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা হয়ে একটি রাস্তা সোজা চলে গেছে হাড়োয়া বাজারে। ওই রাস্তায় বেড়াচাঁপা থেকে তিন কিলোমিটার এগোলেই পড়বে রেল গেট। তার পাশে রেল লাইনের ধার বরাবর প্রায় চারশো মিটার এগোলেই হাড়োয়া স্টেশন। প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী ট্রেন ধরে শহর কলকাতা কিংবা বসিরহাটে যাতায়াত করেন। এলাকার চাষিরা উৎপাদিত ফসল নিয়ে ওই স্টেশন থেকে ট্রেনে করে যান শহরের বাজারে। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুল-কলেজের পড়ুয়া এবং অফিসযাত্রীদেরও ওই রাস্তা ধরে স্টেশনে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। বর্ষায় তাতে জম জমে ভোগান্তি হচ্ছে সকলের।
রেল দফতর জানিয়েছে, হাড়োয়া স্টেশন থেকে বাস রাস্তায় ওঠার জন্য প্রায় চারশো মিটার রাস্তার মধ্যে একশো মিটারের মতো পিচ দেওয়া হলেও তা দেখভালের অভাবে হাল খারাপ। রেল লাইনের পাশ দিয়ে যাওয়া আসা করার বাকি তিনশো মিটারের মতো মাটির রাস্তার অবস্থা অবর্ণনীয়। সর্বত্য বড় বড় গর্তে ভরে গিয়েছে। বিশেষ করে প্রায় দু’বছর হল ডবল লাইন করার জন্য ওই রাস্তায় মাটি ফেলে চওড়া করার পর আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়েছে। স্টেশন থেকে হাড়োয়া এবং বেড়াচাঁপা বাজার পর্যন্ত অটো রিকশা, ভ্যান চলে। যা রাস্তার গর্তে পড়ে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। গাড়ির যন্ত্রাংশও বিকল হচ্ছে।
হাড়োয়া স্টেশন থেকে যেমন প্রতিদিন বহু মানুষ শহরে যান, তেমনই শহর থেকেও হাড়োয়া কিংবা দেগঙ্গায় নানা কাজে শহর থেকে আসেন অনেকে। কলকাতা থেকে বেড়াচাঁপার একটি কলেজে পড়তে আসা শমীক চট্টোপাধ্যায়, জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘ডবল লাইন হোক ভাল কথা, কিন্তু স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছনোর রাস্তার যে ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়েছে তা দ্রুত মেরামতি না করা হলে যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এইটুকু রাস্তা পার হতে কত সময়ও লেগে যাচ্ছে।’’ বারাসাত থেকে হাড়োয়ায় বিদ্যুৎ দফতরে কাজে আসা স্নেহাংশু গঙ্গোপাধ্যায় এবং শিক্ষিকা শ্যামলী বিশ্বাস বলেন, ‘‘কেবলমাত্র ওইটুকু রাস্তার জন্য মাঝে মধ্যে ট্রেন মিস হচ্ছে। ছোট ছেলেমেয়ে কিংবা বয়স্ক মানুষদের রাস্তার গর্তে পড়ে যেতে দেখে খারাপ লাগে। রেল দফতর যদি রাস্তার বিষয়টি একটু দেখত, তা হলে যাত্রীরা উপকৃত হতেন।’’হাড়োয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা ওহাব গাজি, রতন মণ্ডল, কান্তি মুন্ডা, কণিকা মণ্ডলরা বলেন, ‘‘সব্জি, মাছ নিয়ে আমাদের প্রতিদিন কলকাতার বাজারে যেতে হয়। হাড়োয়া রেল গেট পর্যন্ত গাড়িতে আসলেও স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছনো যেন আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে যা বলার তা রেল দফতরের পদস্থ কর্তারাই জানেন বলে দায় সেরেছেন স্টেশন মাস্টার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy