Advertisement
০২ ডিসেম্বর ২০২৪

হাসপাতালে নেই, খোলা বাজারে মিলছে প্রতিষেধক

বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে দেবব্রত বলেন, ‘‘পাগলা কুকুর কামড়ানো গরুর দুধ খেয়ে অসুস্থ হওয়ার গুজবে গ্রামের মানুষকে লাইন দিয়ে হাসপাতাল থেকে অ্যান্টি র‌্যাবিশ ভ্যাকসিন নিতে দেখা গেছে। এ সব বন্ধ হলে জোগানের সমস্যা দূর হবে।’’

লাইন: জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নিতে ভিড় বসিরহাটে। নিজস্ব চিত্র

লাইন: জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নিতে ভিড় বসিরহাটে। নিজস্ব চিত্র

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:২৫
Share: Save:

দিন দশেক হল, জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক অমিল বসিরহাট মহকুমার হাসপাতালগুলিতে। বহু মানুষ আসছেন কুকুরের কামড় নিয়ে। কিন্তু অসহায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘরের বাইরে নোটিস টাঙিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রতিষেধক অমিল— সে কথা।

তবে হাসপাতালে পাওয়া না গেলেও ওষুধের দোকানে দিব্যি মিলছে ওই প্রতিষেধক (অ্যান্টি র‌্যাবিশ)। বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জানুয়ারির প্রথম থেকেই এই প্রতিষেধক নেই। আরও কয়েক দিন সময় লাগবে জোগান স্বাভাবিক হতে। উৎপাদনে কিছু সমস্যার জন্য আপাতত প্রতিষেধকটি আসছে না।’’

তা-ই যদি হবে, তা হলে দোকানে কী করে মিলছে?

বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে দেবব্রত বলেন, ‘‘পাগলা কুকুর কামড়ানো গরুর দুধ খেয়ে অসুস্থ হওয়ার গুজবে গ্রামের মানুষকে লাইন দিয়ে হাসপাতাল থেকে অ্যান্টি র‌্যাবিশ ভ্যাকসিন নিতে দেখা গেছে। এ সব বন্ধ হলে জোগানের সমস্যা দূর হবে।’’

বসিরহাট সুপার স্পেশালিট হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেল, কুকুর-বিড়ালে কামড়ানো-আঁচড়ানো লোকের লম্বা লাইন। বৃদ্ধ ভ্যান চালক সুরেশ দাস কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, ‘‘বড় গরিব। দেখার কেউ নেই। পথে-ঘাটে রাত কাটাই। রবিবার রাস্তায় কুকুর পায়ে কামড়ে দেয়। এখানে এসে শুনছি ভ্যাকসিন নেই। হাত জোড় করে বলেও কোনও লাভ হল না। এখন শুনছি ৪টে ইঞ্জেকশন কিনতে ৬৪০ টাকা লাগবে। দু’বেলা পেট ভরে খাওয়াই হয় না, অত টাকা পাব কোথা থেকে?’’ এক নার্সের কথায়, ‘‘গরিব মানুষগুলোকে ফিরিয়ে দিতে আমাদেরও খারাপ লাগছে। কিন্তু কিছু তো করার নেই। রোজ এক-দেড়শো মানুষ প্রতিষেধক নিতে আসছেন।’’

হাসনাবাদের বরুণহাটের সুপ্রিয়া পালের ছেলে সুমনকে আঁচড়ে দিয়েছে বিড়াল। সুপ্রিয়া বলেন, ‘‘টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রতিষেধক না থাকায় বসিরহাটে আসি। এখানেও নেই। কোনও মতে একটা ফাইল ৩২০ টাকা দিয়ে কিনেছি।’’ বাদুড়িয়ার কাঁকড়াসুতি গ্রামের আনিসুর রহমান ইটভাটায় কাজ করেন। ফেরার পথে কুকুরে কামড়ায়। আনিসুর বলেন, ‘‘দিনভর কাজ করেও সংসার না চলার মতো করে চলে। টাকা দিয়ে ইঞ্জেকশন নেব কী করে!’’

হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘‘কুকুর, বিড়াল, বাঁদরের মতো প্রাণী কামড়ালে, আঁচড়ালে রক্ত বের হচ্ছে কিনা, মাংস ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে কিনা— তা আগে দেখতে হবে। তেমনটা হলে যত দ্রুত সম্ভব অ্যান্টি র‌্যাবিশ ভ্যাকসিন নিতে হবে। প্রাণীটির জীবনহানি হচ্ছে কিনা, সে দিকেও নজর রাখা খুবই জরুরি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anti Rabies Vaccine Basirhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy