Advertisement
E-Paper

Erosion: নদীর ভাঙন গিলে খেল স্কুল, চিন্তা পড়াশোনা নিয়ে

নদী ভাঙনে হঠাৎই তলিয়ে গেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবন। লোকজন দাঁড়িয়ে দেখলেন, কেউ কেউ ছবি তুললেন মোবাইলে।

শিবনাথ মাইতি ও দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৪১
নিশ্চিহ্ন: কিছুদিন আগেও এই ছিল স্কুল বাড়ি। বুধবার হঠাৎই তলিয়ে গেল নদীগর্ভে। তার ঠিক আগের মুহূর্তে তোলা ছবি।

নিশ্চিহ্ন: কিছুদিন আগেও এই ছিল স্কুল বাড়ি। বুধবার হঠাৎই তলিয়ে গেল নদীগর্ভে। তার ঠিক আগের মুহূর্তে তোলা ছবি। নিজস্ব চিত্র।

‘ছিল, নেই— মাত্র এই’

নদী ভাঙনে হঠাৎই তলিয়ে গেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবন। লোকজন দাঁড়িয়ে দেখলেন, কেউ কেউ ছবি তুললেন মোবাইলে। কিন্তু করতে পারলেন না কিছুই। বুধবার বিকেলে সাগরের ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতে খাসিমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বটতলা নদীতে তলিয়ে যায় স্কুলবাড়িটি। মনখারাপ কচিকাঁচাদের।

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগর ব্লকের ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতটি চারিদিকে নদীঘেরা দ্বীপ। ওই দ্বীপের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। পঞ্চায়েতে চারটি প্রাথমিক ও একটি হাইস্কুল রয়েছে। তার মধ্যে খাসিমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বহু দিনের পুরনো। ১৯৫৩ সালে স্থাপিত হয়। আগে একটি টালির চালের ঘরে পঠনপাঠন চলত। পরে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় নতুন দোতলা ভবনটি তৈরি হয়।

স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এক জন প্রধান শিক্ষক ও এক জন পার্শ্বশিক্ষক এবং ৬৫-৭০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে পঠনপাঠন চলত স্কুলে। খাসিমারা ছাড়াও পাশের পাড়া চুনপুড়ি, বাগডাঙার কচিকাঁচারাও পড়তে আসত।

বহু বছর আগে ইটের দেওয়াল ও টালির চালের ঘরে পঠনপাঠন চলত। এ দিকে, স্কুলভবনের পাশে বটতলা নদী ক্রমশ এগিয়ে আসছিল। অনেক আগে থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা স্কুল ভবনটি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলেন। এ দিন বিকেলে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।

বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ ভাটার সময়ে হুড়মুড়িয়ে তলিয়ে যায় দোতলা ভবনটি। এক সময়ে ছোট ছেলেমেয়েদের কলতানে মুখর থাকত যে স্কুল প্রাঙ্গণ হঠাৎই অস্তিত্বশূন্য হয়ে পড়ল সে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, গোটা দ্বীপটাই ক্রমে ক্ষয়ে আসছে। এক সময়ে সাগরদ্বীপের সঙ্গে সংযুক্ত থাকলেও পরে ঘোড়ামারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ভাঙন আর থামেনি। কংক্রিটের বাঁধ দিয়ে, বোল্ডার, বাঁশের খাঁচা নদীতে ফেলেও ভাঙন রোখা যায়নি। তবু যে সময়ে স্কুলভবন তৈরি হয়, তখন নদী ছিল অনেকটাই দূরে। কয়েক বছরের মধ্যে সেই নদী যে স্কুলবাড়িটাকে গিলে খাবে, ভাবেননি কেউ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানালেন, গোটা দ্বীপে খুব কম লোকেরই আর্থিক সঙ্গতি রয়েছে ছেলেমেয়েকে দ্বীপের বাইরে রেখে পড়ানোর। দ্বীপে সেই অর্থে কোনও বেসরকারি স্কুলও নেই। ফলে কচিকাঁচাদের প্রাথমিক পাঠের জন্য প্রাথমিক স্কুলই ভরসা। করোনার জন্য অনেক দিন ধরে সেই স্কুলও বন্ধ। এখন স্কুলভবন তলিয়ে যাওয়ায় প্রশ্নের মুখে ছোটদের শিক্ষার ভবিষ্যৎ।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রবীণ অরুণ প্রামাণিক বলেন, ‘‘এই দ্বীপের সব থেকে প্রাচীন স্কুল ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। স্বাধীনতার কয়েক বছর পরে অনুমোদন পেয়েছিল। আগে দোতলা ভবনের পাশে ইটের দেওয়াল ও টালির চাল দেওয়া ঘরে পড়াশোনা হত। নতুন ভবনটি তলিয়ে যাওয়ার পরে পুরনো ভবনটি এখন সেই অপেক্ষায় আছে। এখন ছোটো ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কী হবে, সেই চিন্তা সকলের মনে।’’

ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জীব সাগর বলেন, ‘‘স্কুলভবন তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী এবং প্রশাসনকে জানানো হবে।’’

Erosion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy