E-Paper

তিন মাস সব্জির বিল না পাওয়ায় সমস্যায় অঙ্গনওয়াড়ি

এই নিয়েই ভাঙড়, ক্যানিং পূর্ব, ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্যান্য বিধানসভা এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:২৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

তিন মাস ধরে সব্জির বিল না পাওয়ায় মিড-ডে মিল চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, সহায়িকারা। অভিযোগ, অক্টোবর মাস থেকে টাকা পাচ্ছেন না। মিড-ডে মিলে বাচ্চাদের জন্য যে ডিম দেওয়া হয়, সে জন্য বরাদ্দ সাড়ে ৬ টাকা। অথচ, বাজারে সেই ডিমের দাম ৮ টাকা প্রতি পিস। দৈনিক মিড-ডে মিল রান্নার জ্বালানির জন্য বরাদ্দ ২৩ টাকা। অথচ, ওই টাকায় জ্বালানির কাঠ পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ। সব্জি বা খিচুড়ি রান্নার জন্য যে হলুদ ব্যবহার করা হয়, সে জন্য আলাদা কোনও টাকা দেওয়া হয় না। এ ছাড়াও, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের প্রতিদিন সেন্টারে গিয়ে বাচ্চাদের ওজন, উচ্চতা, পুষ্টি পরিমাপ করে অনলাইনে আপলোড করতে হয়। মা ও বাচ্চার আধার লিঙ্ক করা, কেওয়াইসি আপডেট করা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ অনলাইনে করতে হয় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। যদিও সরকার থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার জন্য। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ, ওই টাকা দিয়ে বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী ৫-জি অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনা সম্ভব হয় না। ফলে বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে যে ফোন কেনা হচ্ছে, তা ব্যবহার করে কোন কাজই সে ভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। অনলাইনে সমস্ত তথ্য আপলোড করার জন্য মোবাইল রিচার্জের বরাদ্দ ১৬৬ টাকা। অথচ, ওই টাকায় বর্তমান সময়ে কোনও রিচার্জ প্ল্যান নেই। এক মাসের জন্য মোবাইল রিচার্জ করতে হলে ন্যূনতম ২৯৯ টাকা প্রয়োজন।

এই নিয়েই ভাঙড়, ক্যানিং পূর্ব, ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্যান্য বিধানসভা এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

জীবনতলার একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী অঞ্জুরানি মণ্ডল বলেন, ‘‘তিন মাস ধরে মিড-ডে মিলের সব্জির বিল পাচ্ছি না। অথচ, সেন্টারে গিয়ে অভিভাবকদের কাছে আমাদের কথা শুনতে হচ্ছে। ডিমের জন্য যে টাকা বরাদ্দ করা হয়, সেই টাকা দিয়ে ডিম কেন সম্ভব হয় না। ডিম কেনার জন্য অতিরিক্ত টাকা কোথা থেকে আমরা জোগাড় করব বুঝতে পারছি না। সর্বত্র সমস্যার কথা জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী বলেন, ‘‘সরকার মোবাইল কেনার জন্য যে টাকা বরাদ্দ করেছে, তা দিয়ে খেলনা মোবাইল কেনা ছাড়া উপায় নেই! প্রতিনিয়ত অনলাইনে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য আপলোড করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সরকার ১০ হাজার টাকা দিয়ে কেবলমাত্র দায় সেরেছে। যে টাকা মোবাইল রিচার্জ করার জন্য দেওয়া হয়, তা দিয়ে এক মাসের মোবাইল রিচার্জ হয় না। বাধ্য হয়ে গাঁটের পয়সা খরচ করতে হচ্ছে। এ ভাবে কত দিন চলবে জানি না!’’

সমস্যার কথা মেনে নিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জেলা সভাপতি অহল্যা বিশ্বাস কয়াল বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে তিন মাস ধরে সব্জির বিল আমরা পাচ্ছি না। বিষয়টি নিয়ে জেলা নেতৃত্ব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।’’

আইসিডিএসের জেলার ভাইস চেয়ারম্যান তথা ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকাত মোল্লা জানান, বিষয়টি কানে এসেছে। বিভাগীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পদাধিকার বলে জেলার আইসিডিএসের চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা বলেন, ‘‘এ রকম তো হওয়ার কথা নয়। প্রতিদিন সব্জির বিল অনুমোদন করে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও যদি কোনও সমস্যা হয়, খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Anganwadi center Bhangar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy