হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রক্ষীদের মারধরের অভিযোগ উঠল। রবিবার রাতে বনগাঁ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের এই ঘটনায় এক মহিলা রক্ষী-সহ চার জন রক্ষী জখম হয়েছেন। আহতদের নাম তুষারকান্তি ঘোষ, সৌরভ সরকার, জ্যোৎস্না দেবনাথ এবং উজ্জ্বল মণ্ডল। এই ঘটনায় পুলিশ ওয়াসিম রাজা, সুজন বারুই এবং আরিফ খান নামে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বাড়ি মুর্শিদাবাদ, বনগাঁ এবং বাগুইআটিতে। একটি গাড়িও আটক করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। হাসপাতালে আসা রোগীর আত্মীয়দের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত ২টো নাগাদ একটি গাড়িতে করে মত্ত অবস্থায় কয়েক জন হাসপাতালে চড়াও হয়। গাড়ি থেকে নেমে তারা পুরুষ ওয়ার্ডের মধ্যে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করে। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দেন। তাঁদের মারধর করা হয়।
তুষারকান্তি বলেন, “রাত ২টো নাগাদ একটি গাড়িতে কয়েক জন এসে পুরুষ ওয়ার্ডে ঢোকার চেষ্টা করে। আমাকে বলে, এক রোগীকে দেখতে যাবে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে ওদের বলি, ওই শয্যায় কোনও রোগী ভর্তি নেই। তার পরেই আমাকে বলে, বাধা দেওয়ার তুই কে? জোর করে ঢোকার চেষ্টা করায় বাধা দিলে জামার কলার ধরে মারধর শুরু করে। সহকর্মীরা বাঁচাতে এলে তাঁরাও মার খান।”
হাসপাতালে থাকা পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে এক রক্ষী খবর দেন। পুলিশ এসে তিন জনকে ধরে। বাকিরা পালিয়ে যায়। তুষারকান্তির অভিযোগ, “পুলিশের সামনেই ওরা হুমকি দিয়ে বলে, জেল থেকে বেরিয়ে আমাদের দু’টুকরো করে কাটবে। খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি।”
রাতে হাসপাতালে থাকা রোগীর আত্মীয়দের কারও কারও কথায়, “নিরাপত্তারক্ষীদেরই যেখানে নিরাপত্তা নেই, সেখানে আমরা রাতে হাসপাতালে কাদের ভরসায় থাকব!” অভিযোগ, পুলিশকর্মীরা ফাঁড়ির মধ্যেই থাকেন। রাতে হাসপাতাল চত্বরে পুলিশি টহলের দাবি তোলেন রোগীর আত্মীয়েরা।হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বড়াই বলেন, “নিরাপত্তারক্ষীদের মারধর করার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠের কথায়, “এই ঘটনায় যুক্ত বাকিদেরও গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এর পিছনে অন্য কোনও বড়সড় অপরাধমূলক কাজের পরিকল্পনা ছিল কিনা, তা পুলিশ খতিয়ে দেখুক।” পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং নিরাপত্তারক্ষীদের মারধরের মামলা রুজু করা হয়েছে। কী কারণে রাতে অভিযুক্তেরা হাসপাতালে চড়াও হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)