রাখঢাক করার কোনও চেষ্টাই করলেন না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে ‘মধুর’ নয়, স্পষ্ট ভাবেই তা জানিয়ে দিলেন পুরীর গোবর্ধন পীঠের শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতী। সোমবার গঙ্গাসাগরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ সম্পর্কিত একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “মোদীজি, যোগীজি তো পারলে প্রয়াগরাজে আমাকে ঢুকতে দিতেও চাইবেন না। কিন্তু আমাকে দমিয়ে রাখা অত সহজ হবে না। আমি যাবই। শুনুন, ওঁরা কিন্তু আমাকে ভয় পান। আমার সামনে মিউ মিউ করেন।”
এ দিন বাংলাদেশ থেকে মহাকুম্ভ, মোদী-যোগী থেকে আর জি কর বা রাজ্যে জঙ্গিদের গ্রেফতারি--- বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় পুরীর শঙ্করাচার্যকে। আর জি করের ঘটনায় কেন এখনও বিচার পাওয়া গেল না, সেই প্রশ্ন ওঠে। যার উত্তরে রাজ্য প্রশাসনের উদ্দেশ্যে শঙ্করাচার্য বলেন, “বিচার প্রক্রিয়াকে স্বাধীন ও স্বচ্ছ ভাবে চলতে দিন। এমন ঘটনা আর যাতে কখনও না ঘটে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন। আর সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা কখনও করবেন না।”
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে যে অত্যাচারের ঘটনা ঘটে চলেছে, সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ও দেশে যা হচ্ছে, তা চূড়ান্ত অরাজকতা এবং অদূরদর্শিতা। বাংলাদেশ সরকারের মাথায় রাখা উচিত, এই একই ঘটনা যদি অন্য কোনও দেশে বসবাসকারী মুসলিমদের সঙ্গে ঘটে, যেখানে তাঁরা সংখ্যাগুরু নন, তা হলে কেমন লাগবে?”
সাগরমেলাকে কেন্দ্রের তরফে এখনও পর্যন্ত জাতীয় মেলার তকমা না দেওয়ার প্রসঙ্গও তোলা হয় শঙ্করাচার্যের সামনে। এ বিষয়ে তাঁর সাফ কথা, “গঙ্গাসাগর অবশ্যই জাতীয় মেলা। না হলে আমি নিজে এখানে আসতাম নাকি? ওরা (কেন্দ্রীয় সরকার) তকমা না দিলেও কিছু আসে-যায় না। ওদের অপেক্ষায় থাকবেন না। গঙ্গাসাগরকে সাধারণ মানুষই জাতীয় মেলা করে তুলেছে।”
এ রাজ্যের সঙ্গে জঙ্গি যোগের প্রসঙ্গে শঙ্করাচার্যের মন্তব্য, “দেশের স্বার্থ ও সুরক্ষা সবার উপরে। তা রক্ষা করতে যা যা করার, তা করতেই হবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)