গত বছর নোটবন্দি ঘোষণা হওয়ার পর অন্য জায়গার মতো ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে মাথায় হাত পড়েছিল ছোট শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের মুড়াগাছা, বিলকান্দা, পাতুলিয়া, নৈহাটিতে কিছু সংখ্যক ছোট শিল্প নিয়ে ছোট হাব তৈরি হয়েছে। কোথাও কুড়িটি কোথাও চল্লিশটি ছোট শিল্পের কারখানা হয়েছে। গত এক বছরে এই কারখানাগুলির ব্যবসার হার ক্রমশ কমতে শুরু করেছে বলে দাবি অধিকাংশ ব্যবসায়ীর।
একে তো নোটবন্দি তার উপর গত ১ জুলাই থেকে জিএসটির চাপ দুইয়ে মিলিয়ে নাকাল অবস্থা ব্যবসায়ীদের। বেশ কিছু কারখানায় দীর্ঘদিন শ্রমিকদের বেতন হত নগদ টাকায়। সেখানে রাতারাতি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে চেক দেওয়ার ব্যবস্থা হলেও বাদ সেধেছে টাকার অপ্রতুলতা নিয়ে।
পাতুলিয়ায় জাহাজের নাট বোল্ট তৈরির কারখানা নীলাশিস চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘গত বছর এই সময়টা একদম দিশাহারা হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। এখন একটু একটু করে স্বাভাবিক হচ্ছি। তবে এই প্রতিকূলতার সঙ্গে আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের যুঝতে পারাটাই কঠিন বিষয়।’’
একটু একটু করে জট কাটছে নৈহাটির ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র শিল্প হাবেরও। সেখানেও ছোট ছোট বেশ কয়েকটি কারখানার মধ্যে বিদেশি কোম্পানি রয়েছে।
চিনের একটি প্লাস্টিক কোম্পানির প্রতিনিধি লুসি চ্যাং বলেন, ‘‘এ দেশে ব্যবসা করতে এসে আচমকা নোটবন্দি হওয়ায় আমরা অথৈ জলে পড়েছি। ছোট শিল্পের ক্ষেত্রে খুব কষ্ট করে ভেসে থাকতে হচ্ছে। তার কারণ নগদ টাকার উপর ভর করেই এই ব্যবসাগুলি চলে। এখনও খুব ভেবেচিন্তে এগোতে হচ্ছে আমাদের।’’
বুধবারই শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের নানা সংগঠনের উদ্যোগে কালা দিবস পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে পানিহাটিতে স্থানীয় বিধায়ক নির্মল ঘোষের নেতৃত্বে একটি বড় সভা হয়।
সেখানে নির্মলবাবু বলেন, ‘‘যে দেশের অধিকাংশ মানুষ ন্যূনতম আয়ের উপরে ভর করে দিন গুজরান করেন, সেখানে নোটবন্দির সিদ্ধান্ত মানে মানুষকে হত্যা করা। ছোট শিল্পগুলিকেও মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছে এ ভাবে।’’
নোটবন্দির প্রতিবাদে সভায় নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘ছোট শিল্পগুলির উপরে ভর করেই শিল্পাঞ্চলের বহু মানুষ জীবন যাপন করছেন। এ রাজ্যের সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন সেই শিল্পগুলির পাশে দাঁড়ানোর। গত পাঁচ বছরে অনেকগুলি ছোট শিল্প বেড়েছে। নোটবন্দির চাপে তাঁরাও প্রবল ভাবে আক্রান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy