সৌর বিদ্যুতের আলোয় সাজবে বারাসতের একাংশ।
পুরসভা-সহ বারাসতের তিনটি এলাকায় এ বার থেকে সৌর বিদ্যুতের আলো জ্বলবে। বারাসত পুরসভার বিভিন্ন দফতর, বিদ্যাসাগর মঞ্চ, অন্য দিকে, শেঠপুকুর পার্ক, জলাশয় এবং চাঁপাডালির কাছে হাতিপুকুর পার্কও সেজে উঠবে সৌর বিদ্যুতে।
রাজ্য সরকারের ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের প্রায় কোটি টাকা খরচ করে আলোকিত হবে এই তিনটি জায়গা। ধীরে ধীরে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতের বেশ কিছু সরকারি দফতর, স্কুল এবং বিভিন্ন রাস্তার দু’পাশের আলোকস্তম্ভগুলি সৌর বিদ্যুতে আলোকিত করে তোলার কথা ভাবছে বারাসত পুরসভা।
ইতিমধ্যেই নতুন প্রযুক্তিতে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার শুরু করেছে কলকাতা পুরসভায়। এ রাজ্যের ১২টি পার্ক ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাটারি ছাড়া নয়া প্রযুক্তিতে সৌরবিদ্যুৎ চলছে। ফলে বিদ্যুৎ অপচয়ও রোধ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সৌরবিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ শান্তিপদ গণচৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘নতুন প্রযুক্তিতে কোনও ব্যাটারির প্রয়োজন নেই। দিনে যতটুকু সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, ততটাই রাতে ব্যবহৃত হতে থাকে।’’
বারাসত পুরসভা সূত্রের খবর, গোটা পুরসভার বিভিন্ন দফতর, সাংস্কৃতিক মঞ্চ মিলিয়ে প্রতি মাসে কয়েক হাজার টাকা বিদ্যুতের বিল আসে। মাঝেমধ্যে সেই টাকা বকেয়া থেকে যায়। পুরসভার ছাদেই বসানো হয়েছে সৌরবিদ্যুতের আধারটি।
পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বার থেকে নিজেদের বিদ্যুতের সমস্যা নিজেরাই মেটাবে পুরসভা। প্রাথমিক ভাবে তিনটি প্রকল্পে এক কোটি টাকার মতো খরচ হচ্ছে। ধীরে ধীরে বারাসতের অন্য সরকারি জায়গা সৌর বিদ্যুতের আওতায় আনার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা রয়েছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ৩০ কিলোওয়াটের আধার বসানো হচ্ছে। আলোর কাজ চলছে পুরসভার সাংস্কৃতিক মঞ্চ, বিদ্যাসাগরেও। সে সব শেষের মুখে। এমনিতেই বারাসত পুর এলাকায় খুব বেশি পার্ক নেই। হাতিপুকুর এলাকাটিকে নতুন করে সাজিয়ে একটি বিনোদন পার্ক ও আর্ট হাব তৈরি করা হচ্ছে। পুকুরে থাকবে নৌকা বিহারের ব্যবস্থাও। সেই সংস্কারের কাজও চলছে। ওই পার্কেও ১৮ কিলোওয়াটের সৌরবিদ্যুতের আধার বসানো হবে।
পাশাপাশি রবীন্দ্রভবনের কাছের জলাধার সংলগ্ন শেঠপুকুর পার্কটিতেও বসানো হচ্ছে ৩০ কিলোওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ। সেখানে জলাশয়ের মধ্যেই প্যানেল করে সূর্যের আলো ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বারাসত পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জলাশয়ের ফাঁকা এলাকায় সূর্যের পুরো রশ্মিই প্রতিফলিত হয়। অভিনব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে জলাশয়ের মধ্যে এমন আধার এই প্রথম তৈরি হচ্ছে।’’
এই প্রথম নয়, এর আগেও রাজ্য সরকারের টাকায় বারাসত পুর এলাকার তিনটি স্কুলে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার শুরু হয়েছে। বারাসত গার্লস, প্রিয়নাথ এবং রাসবিহারী স্কুলে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিবেশের কথা ভেবে এবং বিপুল বিলের থেকে রেহাই পেতে ধীরে ধীরে সৌরবিদ্যুতের প্রচলন বাড়ানো হচ্ছে এই পুর এলাকার সর্বত্র, এমনটাই বলছেন বারাসত পুরসভার কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy