E-Paper

কিশোরীকে ধর্ষণের পরে টাকা দিয়ে আড়ালের চেষ্টার অভিযোগ, ধৃত তিন

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই নাবালিকা অত্যন্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে। মা বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করেন। বাবা চাষবাস করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

এক নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং তার পরে অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টার অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বারাসত পুলিশ জেলার অধীন একটি এলাকা। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের ঘনিষ্ঠ কয়েক জন ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নাবালিকার পরিবারকে টাকার টোপ দেন বলে অভিযোগ। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে বৃহস্পতিবারেই হান্নান আলি নামে এক জনকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করে। তার পরে শুক্রবার মহম্মদ আনোয়ার আলি এবং মহম্মদ নুর আলম নামে দু’জনকে ধর্ষণের ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। তবে, এই ঘটনাকে ঘিরে শুক্রবার রাতে এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযুক্তের বাড়িতে ইট ছোড়েন গ্রামের লোকজন। পরে বারাসত পুলিশ জেলার তিনটি থানা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই নাবালিকা অত্যন্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে। মা বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করেন। বাবা চাষবাস করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই কিশোরী বাড়িতে তার ভাইকে নিয়ে একাই ছিল। সেই সুযোগে হান্নান ওই বাড়িতে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। দিদিকে ওই অবস্থায় দেখে ছোট ভাই কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। অভিযোগ, সেই কারণে হান্নান ওই বাচ্চাটিকে আছাড় মেরে ফেলে দেয়। কিশোরীর বাবা জানান, মেয়েটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে হান্নান বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তার আগে ঘটনাটি কাউকে জানালে নাবালিকাকে অ্যাসিড ছুড়ে মারার এবং পরিবারের লোকজনকে খুনের হুমকি দিয়ে যায় বলেও অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রের খবর, হান্নান প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য। স্থানীয় এলাকায় তাদের ভেড়ির ব্যবসাও রয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গেও তাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সেই প্রভাব কাজে লাগিয়েই সে ধর্ষণের ঘটনা চেপে দিতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ। এমনকি, স্থানীয় পঞ্চায়েতের কিছু প্রভাবশালীর মাধ্যমে নাবালিকার পরিবারকে আট লক্ষ টাকা দিয়ে হান্নানের পরিবার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ উঠেছে। নাবালিকার পরিবার সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ঘটনার পরে গ্রামের পঞ্চায়েতের সদস্যদের একাংশের চাপে নাবালিকাকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তার মা-বাবা। যে কারণে শুরুতে নাবালিকার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়নি। পুলিশ তাকে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করায়।

কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। হান্নানকে পুলিশ গ্রেফতার করার পরেই ক্ষিপ্ত স্থানীয় মানুষ অভিযুক্তদের বাড়িতে চড়াও
হয়ে সেখানে ভাঙচুর চালান। দফায় দফায় সেখানে উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিনটি
থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, ধৃত নুর আলম এবং আনোয়ার আলি সালিশি সভা বসিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, হান্নান আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে প্রভাব খাটিয়ে তা ধামাচাপা দিয়েছিল।

যদিও তৃণমূল পরিচালিত
স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দাবি করেন, অপরাধ এবং তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা তাঁরা বরদাস্ত
করছেন না। তাঁরা পরিবারটির পাশে আছেন এবং পুলিশের তদন্তে সাহায্য করবেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Barasat Rape

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy