Advertisement
E-Paper

রাস্তায় পড়ে থেকে অবশেষে ছেলের আশ্রয়ে মা

এর আগে হাইকোর্ট একাধিক নির্দেশে বলেছে, বৃদ্ধ বাবা-মায়ের দায়িত্ব নিতে হবে ছেলেকেই। কিন্তু চার ছেলের মা হয়েও সেই সুখ পোড়া কপালে জোটেনি বীণাপাণিদেবীর। অর্ধনগ্ন, অভুক্ত এবং অসুস্থ অবস্থায় সপ্তাহখানেক আগে রাস্তার ধারে কুড়িয়ে পাওয়া গিয়েছিল সত্তর ছোঁয়া ওই বৃদ্ধাকে।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৫
পাকা হবে তো এই আশ্রয়?— নিজস্ব চিত্র।

পাকা হবে তো এই আশ্রয়?— নিজস্ব চিত্র।

এর আগে হাইকোর্ট একাধিক নির্দেশে বলেছে, বৃদ্ধ বাবা-মায়ের দায়িত্ব নিতে হবে ছেলেকেই। কিন্তু চার ছেলের মা হয়েও সেই সুখ পোড়া কপালে জোটেনি বীণাপাণিদেবীর। অর্ধনগ্ন, অভুক্ত এবং অসুস্থ অবস্থায় সপ্তাহখানেক আগে রাস্তার ধারে কুড়িয়ে পাওয়া গিয়েছিল সত্তর ছোঁয়া ওই বৃদ্ধাকে।

কাকদ্বীপ হাসপাতালে একটু সুস্থ হলে জানা যায়, পরিচয়। জানা যায়, নিজের ছেলে, পুত্রবধূই হেনস্থা করে রাস্তায় বের করে দিয়েছিল। হাসপাতালের সুপার ভূপতিনাথ মাঝি বলেন, ‘‘ওঁর শারীরিক আঘাত খুব সামান্যই। কিন্তু আমাদের দেখে মনে হয়েছে, ওঁর মানসিক আশ্রয় দরকার।’’

প্রায় সাত বছর আগে স্বামী সুধাংশুশেখর রথ মারা যাওয়ার পর থেকেই আশ্রয়ের খোঁজে চার ছেলের দোরে দোরে ঘুরেছেন খড়িমুঠা গ্রামের ওই বৃদ্ধা। কিন্তু কোনও ছেলেই দায়িত্ব নিতে চাননি বলে জানিয়েছেন তিনি। এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন সাগরে। কিছু দিন সেখানেও গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে কাকদ্বীপে ছোট ছেলের কাছে যান। বৃদ্ধার অভিযোগ, ‘‘একটু জমি-জায়গা ছিল। তা-ও চাপ দিয়ে লিখিয়ে নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় রাস্তায় বের করে দিয়েছে ছোট ছেলে আর তার বউ।’’

চার দিন কাকদ্বীপ বাসস্ট্যান্ডের কাছে পড়েছিলেন। তারপর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রাথমিক ভাবে সেই দায়িত্ব নিয়েছিলেন দেবব্রতবাবু। ওষুধপত্রও জোগাড় করেন। তাঁর কথায়, ‘‘দেখি, ওঁর জন্য কোনও ভাতার ব্যবস্থা করা যায় কিনা।’’

কাকদ্বীপ থানার ওসি সুদীপ সিংহ বৃদ্ধার সেজো ছেলে উত্তমকে ডেকে পাঠান। তিনি মায়ের অবস্থা শুনে দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন। রাজি সেজো বৌমা পুতুলও। সোমবার তাঁরা বীণাপাণিদেবীকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে গিয়েছেন। উত্তমবাবু বলেন, ‘‘এরপরে আর মাকে ছাড়ব না। আমার নিজের কাছেই রেখে দেবো।’’ উত্তমের অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। নিজে দিনমজুর, জোগাড়ের কাজ করেন। ঘরে দুই ছেলের একজন বিএ, একজন উচ্চ মাধ্যমিকের পরে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। তাঁরাই ওই বৃদ্ধার দেখভাল করবেন বলে জানিয়েছেন।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, ‘‘আমরা নজরে রাখছি। এরপরে যদি ওঁর সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার হয়, নেতিবাচক কোনও রিপোর্ট আসে, তা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে সকলের বিরুদ্ধেই।’’

Mother sick banished
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy