Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Sonarpur Police

লাল্টু নন, খুনের নীল নকশায় ছিলেন অন্য কেউ! সোনারপুর-কাণ্ডে গ্রেফতার মূলচক্রী, অধরা ৫

সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, খুনের সময় মোট ৫ যুবক ঘরের মধ্যে ঢুকেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন গুলি চালায়। তবে মূলচক্রী দীপ ঘটনাস্থলে ছিলেন না।

খুনীদের তালিকায় ছিলেন না, তবু কেন খুন হলেন লাল্টু?

খুনীদের তালিকায় ছিলেন না, তবু কেন খুন হলেন লাল্টু? —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সোনারপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২২ ১৫:৫৫
Share: Save:

টার্গেট ছিল এক জনকে খুনের। পরিকল্পনা মাফিক সেখানে পৌঁছে যান পাঁচ জন। কিন্তু সেখানে ‘টার্গেট’ ছিলেন না। তাঁর বদলে অন্য এক জনকে গুলি করে পালান ৫ যুবক। সোনারপুরে লাল্টু হাজরা খুনের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেল পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছেন মূলচক্রীও। পুলিশ সূত্রে খবর, বাকি দের খোঁজ চলছে। শনিবার সকালে লাল্টুর দেহ উদ্ধার হয় রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কামরাবাদ রেল গেটের কাছে একটি বাড়ি থেকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত লাল্টুর দেহ যে বাড়িতে পাওয়া গিয়েছে তা ময়ূখ ভট্টাচার্য নামে এক যুবকের। ময়ূখ লাল্টুর বন্ধু।

এই খুনের ঘটনায় রবিবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করেছে সোনারপুর থানার পুলিশ। তারা জানিয়েছে, ধৃতের নাম দীপ মণ্ডল। ২৭ বছরের ওই যুবক দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা যাচ্ছে, এর আগেও দীপের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছিল। দিন কয়েক আগে জেল থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। রবিবার দুপুরে ধৃতকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়।

স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে কামরাবাদ রেল স্টেশনের কাছে এক বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন লাল্টু হাজরা। সেখানেই তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, খুনের সময় মোট ৫ যুবক ঘরের মধ্যে ঢুকেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন গুলি চালায়। তবে মূলচক্রী দীপ ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি শুধু খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন। দীপের নির্দেশে ৫ জন এসেছিল এই খুন করতে।

খুনের কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, এ বছর বিজয়া দশমীতে অভিযুক্ত দীপের সঙ্গে স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দার ব্যাপক গন্ডগোল হয়। সেই সময় বিশ্বজিৎ সরকার নামে এক যুবক নাকি দীপকে মারধর করেন। সেই মারের প্রতিশোধ নিতে বিশ্বজিৎকে দুনিয়া থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় দীপ।

দীপরা খবর পেয়েছিলেন, শুক্রবার কামরাবাদ রেল স্টেশনের কাছে বন্ধুর বাড়িতে থাকবেন বিশ্বজিৎ। সেই মতো ৫ জনকে ওই বাড়িতে পাঠান দীপ। কিন্তু তাঁরা গিয়ে দেখেন সেখানে দীপের বদলে রয়েছেন লাল্টু। কিন্তু লাল্টুর সঙ্গেও বিতণ্ডা শুরু হয় তাঁদের। তখনই ওই ৫ জনের এক জন গুলি চালিয়ে দেন বলে অভিযোগ। এর পরই সেখান থেকে চম্পট দেন ৫ যুবক। তার পর গুলি চালানোর ঘটনা ফোন করে তাঁরা দীপকে জানিয়েছিলেন পুলিশ সূত্রে খবর।

লাল্টু-খুনের তদন্তে নেমে দীপের মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখে এমনই সব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এর পর দীপকে পাকড়াও করে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চালান তদন্তকারী আধিকারিকরা। এক সময় নিজের দোষ কবুল করেন তিনি। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

তবে খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। ওই ৫ যুবকের খোঁজে এখনও তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এ নিয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলের কাছের সিসিটিভি খতিয়ে দেখা হয়। মূলচক্রীর বয়ানে অসঙ্গতিও ছিল প্রথম থেকে। দীপকে গ্রেফতারের পর বাকি ৫ জনেরও খোঁজ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sonarpur Police Murder arrest Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE