পদক্ষেপ: প্লাস্টিক রুখতে অভিযানে সামিল বসিরহাটের পুরপ্রধান। নিজস্ব চিত্র
রথযাত্রার আবহে শুরুতেই ধাক্কা খেল প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি।
শুক্রবার থেকেই রাজ্য জুড়ে ৭৫ মাইক্রনের কম পাতলা প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ হওয়ার কথা। গত কয়েকদিন ধরে তা নিয়ে প্রচার চালিয়েছে প্রশাসন। দুই ২৪ পরগনার বিভিন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েতের তরফেও বাজার এলাকা-সহ বিভিন্ন জায়গায় লাগাতার প্রচার চালানো হয়েছে। প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ না হলে ক্রেতা-বিক্রেতা, দু’পক্ষকেই জরিমানা করার কথাও বলা হয়েছে।
কিন্তু নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনেই তেমন কড়াকড়ি চোখে পড়েনি দুই জেলার কোথাও। প্রশাসনের দাবি, রথের জন্যই এ দিন নজরদারিতে ছাড় ছিল। শনিবার থেকে কড়া নজরদারি শুরু হবে। টাকি, হাসনাবাদ, বনগাঁ, অশোকনগর থেকে ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, সর্বত্রই বাজার-হাটে প্লাস্টিকের ব্যবহার চোখে পড়েছে এ দিন। রথের মেলাগুলিতে প্লাস্টিকের ব্যাগেই দেদার কেনাকাটা চলেছে।
হাসনাবাদের ফল ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ দালাল বলেন, “আজ রথের পূজোর জন্য অনেকে বিভিন্ন রকমের ফল কিনতে আসছেন। আগে যা প্লাস্টিক ছিল, তাতেই দিয়ে দিচ্ছি। শনিবার থেকে নিয়ম মেনে চলব।” অন্যান্য বাজারের অনেক ব্যবসায়ীও রথের সাফাই দিয়ে প্লাস্টিক ব্যবহার করেছেন এ দিন। কেউ কেউ আবার জানান, ৭৫ মাইক্রনের বেশি প্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে পুরনো প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন। ধরপাকড় শুরু হলে ব্যবহার বন্ধ করে দেবেন।
মাসখানেক ধরে সচেতন করার পরেও কেন এ দিন থেকে ধরপাকড় শুরু করা গেল না?
বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, “শুক্রবার রথ। অনেক গরিব মানুষ দোকান দিয়ে আয় করেছেন। আমরা এ দিন তাই ধরপাকড় করিনি।” অশোকনগর- কল্যাণগড়ের পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, “এ দিনও আমরা মানুষকে সচেতন করেছি। শীঘ্রই ধরপাকড় করা হবে।” টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “শনিবার থেকে বিভিন্ন বাজারে হানা দেওয়া হবে। নিয়মভঙ্গকারীদের জরিমানা করা হবে।”
তবে একেবারেই উল্টো ছবি চোখে পড়েছে বসিরহাটে। বৃহস্পতিবারই বসিরহাটের একাধিক বাজারে অভিযান চালিয়ে প্রচুর প্লাস্টিক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। জরিমানাও করা হয় অনেক ক্রেতা-বিক্রেতাকে। শুক্রবারও পুরকর্মীদের নিয়ে বাজারে ঘোরেন বসিরহাটের পুরপ্রধান অদিতি মিত্র। বিভিন্ন দোকানে জমা রাখা প্লাস্টিক বাজেয়াপ্ত করা হয়। বসিরহাটের নতুন বাজারে প্লাস্টিক ব্যবহারের জন্য এ দিন জরিমানা করা হয়েছে চার ব্যবসায়ীকে। পুরকর্মীরা জানান, বৃহস্পতিবারের অভিযানের পরে এ দিন অনেক ব্যবসায়ীই সচেতন হয়েছেন। ক্রেতা-বিক্রেতাকে সচেতন করতে এ দিন পুরসভার তরফে প্রচারের পাশাপাশি দেওয়ালে পোস্টার মারা হয়। পুরপ্রধানকে দেখা যায়, নিজে হাতে পোস্টার সাঁটাতে। তিনি বলেন, “প্লাস্টিক দূষণ সভ্যতার নয়া সঙ্কট। প্লাস্টিক বর্জন করতেই হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy