(বাঁ দিকে) চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে ঘরের জিনিসপত্র। (ডান দিকে) চাল উড়ে গিয়েছে। ছবি: দিলীপ নস্কর।
চাল উড়ে গিয়েছে। পড়ে রয়েছে মাটির ভাঙা দেওয়াল। ঘরের জিনিসপত্র এদিক ওদিক ছড়ানো। পাশেই পড়ে আছে শিকড় সমেত উপড়ানো গাছ। কোলে পাঁচ মাসের শিশুকে নিয়ে ভাঙা সংসারে কী যেন খুঁজডে চলেছেন মহিলা। সামনে গিয়ে ‘কী খুঁজছেন’ প্রশ্ন করতেই মুখ তুলে ছলছল চোখে বলেন, ‘‘সব শেষ। এখন কী খাব, কোথায় যাব জানি না।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজার হরিণডাঙা গ্রামের বধূ শান্তি হালদারের ঘরের মতোই অবস্থা গ্রামের আর ১০-১২টি পরিবারের। রবিবার দুপুরে মিনিট তিনেকের ঝড় ওই পরিবারগুলির জীবনটাই অনিশ্চিত করে দিয়েছে। খোলা আকাশের নীচে ঠাঁই নিয়েছে পরিবারগুলি। ঘর মেরামত করার সম্বলটুকুও নেই। এখন কী করবেন, সেই চিন্তাতেই মাথা খুঁড়ছেন আশ্রয়হীন অনাদি হালদার, শক্তি হালদাররা।
স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সিপিএমের মহুয়া রায় বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি যাতে ইন্দিরা আবাসের ঘর, চাল-ডাল পান সে জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
মন্দিরবাজারের বিডিও অচিন্ত্য ঘোষ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর সোমবার বিকেলে ওই গ্রামে গিয়েছিলাম। ঝড়ে প্রায় দশটি বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। ওই সব পরিবারের সদস্যদের একটি প্রাথমিক স্কুলে রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের চাল, ত্রিপল ও জামাকাপড় দেওয়া হবে।’’
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের বেশিরভাগই পেশায় মৎস্যজীবী ও দিনমজুর। অনেক কষ্ট করে এক চিলতে ঘর করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ঝড়ে সব শেষ করে দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিরার দুপুর দেড়টা তুমুল বৃষ্টি হচ্ছিল। আচমকা প্রবল ঝড় গ্রামের পূর্ব দিক থেকে পঞ্চিম দিকে ধেয়ে যায়। ঝড়ে উড়ে যায় ঘরের টিন, খড়ের চাল। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অনাদিবাবু বলেন, ‘‘ঝড়ের সময় আমরা গ্রামের অনেকেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। তাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। রাতে ঝড় হলে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy