Advertisement
০২ মে ২০২৪

পড়ুয়াদের চোখের জল যেতে দিল না স্যারকে

নিতে এসেছিলেন বিদায় সংবর্ধনা। কিন্তু আর তা হল না। ছাত্রদের আবদার মেনে এই স্কুলেই থেকে যেতে হল স্যারকে। বুধবার হাসনাবাদের ঘূর্ণি গ্রামে প্রধান শিক্ষকের বদলি আটকাল ছাত্ররা। হাসনাবাদের চকপাটলি পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে ঘূর্ণি আদর্শ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উদয়কুমার দাসের বাড়ি বারাসতে।

থেকে যান স্যার। ছবি: নির্মল বসু।

থেকে যান স্যার। ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৬ ০১:৩৬
Share: Save:

নিতে এসেছিলেন বিদায় সংবর্ধনা। কিন্তু আর তা হল না। ছাত্রদের আবদার মেনে এই স্কুলেই থেকে যেতে হল স্যারকে।

বুধবার হাসনাবাদের ঘূর্ণি গ্রামে প্রধান শিক্ষকের বদলি আটকাল ছাত্ররা। হাসনাবাদের চকপাটলি পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে ঘূর্ণি আদর্শ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উদয়কুমার দাসের বাড়ি বারাসতে। যাতায়াতের সুবিধার জন্য আবেদন করেছিলেন অশোকনগরের একটি স্কুলে। সরকারি ভাবে ওই আবেদনে সাড়াও মেলে।

এ দিন ছিল ঘূর্ণি আদর্শ হাইস্কুলে হেডস্যারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের আয়োজন প্রায় শেষ। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে এসে তা দেখে ক্ষেপে ওঠে। স্যারকে যেতে দেব না বলে স্কুলের গেটে তালা দিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। পড়ুয়ারা স্যারের পা ধরে কান্নাকাটি শুরু করে।

ওই স্কুলে ২০০৫ সালে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন উদয়বাবু। পাঁচটি ঘর নিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে শুরু হয় পথচলা। তারপর থেকে স্কুলটির অনেক উন্নতি হয়েছে বলে দাবি অভিভাবকদের। দু’তলা স্কুলে ১৫টি ঘর হয়েছে। কম্পিউটার আসে। ওই স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া রাহুল গায়েন, প্রতিমা ভৌমিকরা বলে, ‘‘স্যারের হাত ধরে স্কুলের পঠনপাঠনের অনেক উন্নতি হয়েছে। স্যারের পড়ানোর জন্যই আজ ভৌত বিজ্ঞান ও অঙ্কে আর ভয় লাগে না। ষত্ন নিয়ে স্যার ওই বিষয়গুলি পড়ান।’’ তারা জানায়, পড়া না পারলে স্যার বকতেন ঠিকই। কিন্তু তারপরেই বাড়িতে ফোন করে খোঁজ নিতেন। কোনও ভাবেই স্যারকে যেতে দেওয়া হবে না।

স্কুলের অন্য শিক্ষকেরা জানান, বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত বিক্ষোভ চলার পর প্রধান শিক্ষক হার মানেন ছাত্রছাত্রীদের চোখের জলের কাছে। লিখিত ভাবে স্কুল থেকে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি আদায়ের পরেই ছাত্রছাত্রীরা বাড়ি যায়। স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি তারকনাথ দাস বলেন, ‘‘আমরা কোনও ভাবেই চায়নি হেড স্যার চলে যান। কিন্তু সরকারি নিয়ম মানতে আমরা সকলেই বাধ্য।’’ কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের দেখে বুঝলাম উনি তাদের কাছে কতটা প্রিয়। এখন আর স্যারকে যেতে দেওয়া হবে না বলে তিনি জানান।

উদয়বাবু বলেন, ‘‘সুবিধা হবে বলে অন্যত্র স্কুলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু ওরা যে আমাকে এতটা ভালোবাসে তা আগে জানতাম না। তা হলে আর অন্যত্র যাওয়ার আবেদন করতাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Students transfer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE