Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Sandelbil High School

মাত্র ১৪ জন পড়ুয়াকে নিয়ে চলছে পড়াশোনা

হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সান্ডেলবিল জুনিয়র হাইস্কুলে দু’টি ঘরে দু’জন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে এ ভাবেই চলছে পড়াশোনা। 

ভাঙাচোরা ঘরেই ক্লাস। নিজস্ব চিত্র

ভাঙাচোরা ঘরেই ক্লাস। নিজস্ব চিত্র

নবেন্দু ঘোষ
হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া দু’জন। অষ্টম শ্রেণিতে দু’জন। সব মিলিয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পর্যন্ত পড়ুয়া ১৪ জন হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সান্ডেলবিল জুনিয়র হাইস্কুলে দু’টি ঘরে দু’জন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে এ ভাবেই চলছে পড়াশোনা।

গৌড়েশ্বর নদী বাঁধের পাশে স্কুল। পাশেই রয়েছে একটি দোতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়। অথচ, জুনিয়র হাই স্কুলের ভবন বলতে শুধুমাত্র দু’টি ঘর। তা-ও বারান্দা বা ঘরের অবস্থাও ভাল নয়। একটি ঘর অফিস হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর একটি ঘরে রয়েছে হাতেগোনা কয়েকজন পড়ুয়া।

স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালে। প্রথম দিকে ক্লাস হত পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘরে। তবে ২০১৭ সাল থেকে এই বিদ্যালয়ের নিজস্ব ঘরে ক্লাস হতে শুরু করে। আরও জানা গেল, বিদ্যালয়ে শুরুতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪ জন। তবে ২০১৩ সালের প্রথম দিকে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে হয় ৩৭। কিন্তু ২০১৫ সাল নাগাদ এই বিদ্যালয় থেকে বেশিরভাগ পড়ুয়া চলে গিয়ে আশপাশের বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে শুরু করে। এই সময়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৮-এ এসে দাঁড়ায়। ২০১৭ সালে আরও কমে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৪। ২০১৮ থেকে পড়ুয়ার সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১৪। কিন্তু কেন পড়ুয়ারা মুখ ফিরিয়েছে এই বিদ্যালয় থেকে?

স্থানীয় মানুষজন জানালেন, না আছে প্রয়োজনীয় ঘর, না আছে পর্যাপ্ত শিক্ষক। তাই বেশিরভাগ অভিভাবকেরা এই বিদ্যালয়ে না পাঠিয়ে আশপাশের গ্রামে থাকা দু’টি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করছেন।

স্কুলের পাশের বাসিন্দা বিমল বৈদ্য, দীপঙ্কর মণ্ডল, সুবল মণ্ডলরা বলেন, ‘‘আমাদের ছেলেমেয়েদের এই স্কুলে ভর্তি না করে কিছুটা দূরের রূপমারি ও কনকনগর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছি। কারণ, এখানে পঠন-পাঠনের মানের থেকে অনেক ভাল ওই দুই স্কুল। অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এই স্কুলে তো পর্যাপ্ত ঘরটুকুও নেই।’’

স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, একজন শিক্ষিকা ও একজন শিক্ষক রয়েছেন। জানা গেল আর একজন শিক্ষিকা ছিলেন। কিন্তু এখন ছুটিতে। প্রতাপ মণ্ডল, রাজা সরকার নামে দুই ছাত্র জানায়, শৌচাগারের অবস্থা খারাপ। পানীয় জলেরও সুব্যবস্থা নেই। বর্ষাকালে সামনের মাঠে জল জমে খুব খারাপ অবস্থা হয়। সেই কাদা-জল পেরিয়েই ক্লাসে ঢুকতে হয়।’’

প্রধান শিক্ষক এ সব নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। যদিও স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদিন গাজি বলেন, ‘‘এই বিদ্যালয় থেকে আশপাশের বিদ্যালয়গুলিতে পরিকাঠামো অনেক ভাল। তাই সেখানে অভিভাবকেরা বাচ্চাদের ভর্তি করছেন।’’ ডিআই সুজিত মাইতি বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ের যা সমস্যা আছে, তা যদি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান তা হলে নিশ্চয় দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hingalgunj School Sandelbil Junior High School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE