Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Diamond Harbour

একজন পড়ুয়ার জন্য স্কুলে একাই শিক্ষিকা

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সাতজন সদস্য রান্নার দায়িত্ব সামলানোর জন্য রয়েছেন। ছাত্রছাত্রী না থাকায় তাঁদের মধ্যে কেউ একজন বাড়ি থেকে মিড-ডে মিল রান্না করে আনেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:২৭
Share: Save:

স্কুলে পড়ুয়া একজন। শিক্ষিকাও একাকী।

এই পরিস্থিতিতে কার্যত বন্ধ হতে বসেছে ডায়মন্ড হারবারের আটকৃষ্ণপুর জুনিয়র হাইস্কুল। স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লকের ধনবেড়িয়া কানপুর পঞ্চায়েত আটকৃষ্ণপুর গ্রামে ২০১১ সালে স্কুলটি অনুমোদন পায়। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের জমিতে দোতলা ভবন তৈরি হয়। ওই ভবনে প্রাথমিক ভাবে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পঠন-পাঠন চলত। পরে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসের অনুমোদন মেলে। কয়েক মাস আগে পর্যন্তও ১২ ছাত্রছাত্রী ও তিনজন শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি দু’জন শিক্ষক বদলি হয়ে যান। তারপরে প্রায় সব ছাত্রছাত্রী অন্য স্কুলে চলে যায়। বর্তমানে স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির একজন মাত্র পড়ুয়া রয়েছে। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। রোজ স্কুলে আসতে পারে না। তার ঠাকুমা স্কুল থেকে মিড-ডে মিলের খাবার নিয়ে যান।

স্কুলে বড় রান্নাঘর থাকলেও তা ব্যবহার হয় না। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সাতজন সদস্য রান্নার দায়িত্ব সামলানোর জন্য রয়েছেন। ছাত্রছাত্রী না থাকায় তাঁদের মধ্যে কেউ একজন বাড়ি থেকে মিড-ডে মিল রান্না করে আনেন।

তবে পড়ুয়া না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন একমাত্র শিক্ষিকা মঞ্জুষা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি আসেন কলকাতার যাদবপুর মুকুন্দপুর এলাকা থেকে। প্রায় ১২০ কিলোমিটার রাস্তা। স্বামী ভিন্ রাজ্যে চাকরি করেন। শাশুড়ি মানসিক ভাবে অসুস্থ। একমাত্র স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে রেখে স্কুলে আসেন তিনি।

মঞ্জুষা বলেন, ‘‘পড়ানোর জন্য স্কুলে আসি। কিন্তু সেটাই করতে পারছি না। এখন স্কুলে এসে বিভিন্ন প্রকল্প-সংক্রান্ত বিষয় নথিভুক্ত করি, মিড-ডে মিল সংক্রান্ত বিষয়ে কখনও ব্লক অফিস, কখনও স্কুল পরিদর্শক অফিসে যাই।’’ তিনি জানান, বদলির জন্য একাধিকবার আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও তা হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, স্কুলে আগে ৪০-৫০ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। সে সময়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকায় ভালই চলছিল। বর্তমানে আশেপাশে চার-পাঁচটি হাইস্কুল রয়েছে।

সেগুলির পরিকাঠামো এই স্কুলটির তুলনায় ভাল। ফলে ধীরে ধীরে পড়ুয়ারা অন্য স্কুলে চলে যেতে শুরু করে। শিক্ষকেরা বদলি নেওয়ার পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।

এ বিষয়ে ডায়মন্ড হারবার দক্ষিণ সার্কেলের স্কুল পরিদর্শক বরজাহান শাহ বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি। একমাত্র শিক্ষিকা বদলির জন্য আবেদন করেছেন। তা শীঘ্রই মঞ্জুর হবে। যে ছাত্রটি রয়েছে, তাকে অন্য স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে। স্কুল ভবনটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Diamond Harbour Teachers Day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE