ধৃত: হাবড়ায়। নিজস্ব চিত্র
ওদের নিপুণ ‘হাতের কাজে’ রাতের ঘুম উড়েছিল পুলিশের। গত দেড় বছর ধরে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া, অশোকনগর, আমডাঙা, দেগঙ্গা, গাইঘাটা-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকার রেজিস্ট্রি অফিস, স্কুল, ব্যাঙ্ক থেকে একের পর এক কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরেদের হদিস পেতে কালঘাম ছুটছিল পুলিশের। কয়েকজন দাগি দুষ্কৃতীকে গ্রেফতারও করা হয়। তারপরেও কম্পিউটার চুরি বন্ধ হয়নি।
শেষমেশ কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই ওই সব কম্পিউটার চুরি চক্রের হদিস পেয়েছে পুলিশ। রবিবার রাতে অশোকনগর থানার পুলিশ মাদক পাচারের সময়ে তিনজনকে গ্রেফতার করে। তাদের জেরা করে কম্পিউটার চুরি চক্রের একটি বড়সড় চক্রের হদিস মিলেছে। পুলিশের দাবি, মাদক নিয়ে গ্রেফতার হওয়া তিন পাচারকারী কম্পিউটার চুরি চক্রের সঙ্গেও জড়িত। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধৃতেরা ইতিমধ্যে ২৫টি এলাকায় কম্পিউটার চুরির কথা স্বীকার করেছে। ওদের বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ জানায়, ধৃত আমজাদ আলি, বাকিবুল্লা আলি ও হাসানুর আলি অশোকনগর এবং আমডাঙা থানা এলাকার বাসিন্দা। বয়স ১৮–২৫ বছরের মধ্যে। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানিয়েছেন, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেও চক্রটি সক্রিয় ছিল।
পুলিশের দাবি, অত্যন্ত সংগঠিত ভাবে ছক কষে কাজ করত চক্রটি। সচরাচর যে ব্যাঙ্ক বা স্কুলে চুরি করবে, সেখানে ফেরিওয়ালা সেজে ক’দিন ঘুরঘুর করত। রাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন, তা-ও নিজেদের চোখে দেখে আসত।
তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় জানা গিয়েছে, বাকিবুল্লা ও হাসানুর স্কুল, ব্যাঙ্কের তালা ভাঙত। আমজাদ গাড়ি নিয়ে কিছুটা দূরে অপেক্ষা করত। মকবুল আলি নামে চক্রের পান্ডার বাড়ি শাসনে। মাদক নিয়ে ধরা পড়ে সে এখন জেলে। মকবুল চোরাই কম্পিউটার বাগুইআটি এলাকায় বিক্রি করত। পুলিশ সেখানেও তল্লাশি চালিয়েছে।
অশোকনগর থানার ওসি পলাশ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চোরেরা হাজার পাঁচেক টাকা পেত একেকটি কম্পিউটার বেচে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি কম্পিউটার উদ্ধারও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে্ন তিনি।
গত কয়েক মাসে চোরেরা শ’তিনেক কম্পিউটার চুরি করেছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু কেন শুধু কম্পিউটারের উপরেই নজর ছিল চোরেদের? পুলিশের অনুমান, ইদানীং গ্রামের স্কুলেও দামি কম্পিউটার থাকে। সেখানে রাতে নিরাপত্তা তেমন থাকে না। সেখানে ‘অপারেশন’ চালানো সুবিধাজনক।
মঙ্গলবার ধৃতদের নিয়ে হাবড়া থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় এলাকার বেশ স্কুল ও পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েছেন। কী ভাবে তারা কম্পিউটার সরাত, তা দুষ্কৃতীরা পুনর্নির্মাণ করে দেখিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy