Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ বার বিধি ভাঙায় বাতিল ৩ মনোনয়ন

মনোনয়ন পেশ করার সময়ের মধ্যে দলীয় প্রতীকের শংসাপত্র (অ্যানেক্সার-২) জমা না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার দিন বারাসত পুরসভায় চার ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল। শুক্রবার মধ্যমগ্রাম পুরসভায় বাতিল হল দুই সিপিএমের প্রার্থী এবং এক বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মধ্যমগ্রাম শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৫ ০১:৫১
Share: Save:

মনোনয়ন পেশ করার সময়ের মধ্যে দলীয় প্রতীকের শংসাপত্র (অ্যানেক্সার-২) জমা না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার দিন বারাসত পুরসভায় চার ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল। শুক্রবার মধ্যমগ্রাম পুরসভায় বাতিল হল দুই সিপিএমের প্রার্থী এবং এক বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়ন।

এ দিন মনোনয়ন বাতিল হয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী মিনু রায়চৌধুরী, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী অসীমা ঘোষ এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী প্রতিমা চক্রবর্তীর। অসীমা প্রাক্তন কাউন্সিলর। অভিযোগ, ওই তিন জন মধ্যমগ্রাম পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী। সরকারি কর্মচারী হওয়ায় তাঁরা প্রভিডেন্ট ফান্ড পান। তাই তিন জনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। তিন জনের বিরুদ্ধেই বারাসতের মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল।

মধ্যমগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ বলেন, “নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করে প্রার্থী হওয়ায় আমরা ওই তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। মনোনয়ন বাতিলের ব্যাপারে আমাদের চেয়েও সক্রিয় ছিল সিপিএম-ই। এটা ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।” বারাসতের মহকুমা শাসক পীযূষকান্তি দাস বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে দুই বাম এবং এক বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।”

তাঁদের প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করার ব্যাপারে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নেপালদেব ভট্টাচার্য বলেন, “কেউ যদি স্বাস্থ্যকর্মী হয়ে কাউন্সিলর হতে পারেন, তা হলে মধ্যমগ্রাম পুরসভায় কী এমন ঘটল, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। প্রশাসন এ ভাবেই শাসক দলের হয়ে পক্ষপাতিত্ব করছে।” সিপিএমের মধ্যমগ্রামের জোনাল সম্পাদক খোকন মজুমদার শুক্রবার আলিমুদ্দিনে বৈঠকের পরে অভিযোগ করেন, “আমাদের জেলার ৩০টি পুরসভায় ভোট হচ্ছে। তার মধ্যে ১৭টি পুরসভায় বাম, বিজেপি এবং তৃণমূলের স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রার্থী হয়েছেন। তা হলে মধ্যমগ্রাম কী দোষ করল? আসলে বারাসতের মহকুমাশাসক মধ্যমগ্রামের প্রাক্তন বিধায়কের কথায় চলছেন।” পীযূষবাবু বলেন, “১৭টি পুরসভার ব্যাপারে অভিযোগ এসেছে কি না, তা আমার জানা নেই। কিন্তু মধ্যমগ্রাম পুরসভার ব্যাপারে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখেই তিন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

বিজেপি-র জেলা সহসভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “আমাদের যে প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে, তিনি মধ্যমগ্রাম পুরসভার স্থায়ী কর্মী নন। আসলে পুর প্রশাসন এবং পুলিশ তৃণমূলের কথা শুনে যা ইচ্ছে তাই করছে। সাধারণ মানুষ ভোটবাক্সে এর জবাব দেবেন।”

তাদের দুই প্রার্থী অসীমা ঘোষ এবং মিনু রায়চৌধুরীর প্রার্থী পদ বাতিল হওয়ায় এ দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানায় সিপিএম। দলের তরফে পুরভোটের দায়িত্বে থাকা রবীন দেব বলেন, “এই দু’জন মধ্যমগ্রাম পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী। পুর কর্মী নন। তাঁদের মনোনয়ন স্ক্রুটিনিতে পাশ হয়েও প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা বিধায়ক রথীন ঘোষের হস্তক্ষেপে বাতিল হয়। যা আইনসঙ্গত নয়। কমিশন জানিয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।” এ ছাড়া, বারাসতে যে ভাবে চার ফব প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ রবীনবাবু।

যদিও এটি ফব-র অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করে রবীনবাবু বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা কমিশন রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।” ওই চার কেন্দ্রে তাঁরা কি অন্য কোনও প্রার্থীকে আপনারা সমর্থন করবেন? রবীনবাবুর জবাব, “এ ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। যা হবে, তা জেলা বামফ্রন্টে আলোচনা করেই হবে।”

তবে বারাসতে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ানোর দায়িত্বে থাকা স্থানীয় নেতাদের শো-কজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফব রাজ্য নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কাউকেই ছাড়া হবে না। তদন্ত করে দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে।”

এ ব্যাপারে প্রাক্তন মন্ত্রী সরল দেবের কোনও হাত নেই, তা জানিয়ে নরেনবাবু বলেন, “সরলদা এ ব্যাপারে কোনও দায়িত্বে ছিলেন না। তিনি পুরভোটের কোনও কমিটিতেও নেই। অযথা তাঁকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। স্থানীয় কিছু নেতার গাফিলতিই এর জন্য দায়ী।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE