তৃণমূল নেত্রীর শ্লীলতাহানি, তাঁর গাড়ি ভাঙচুর এবং দেহরক্ষীকে মারধরের অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায়। অভিযুক্ত শাসকদলেরই এক নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন ওই নেত্রী। সোমবার রাত থেকে গোটা ঘটনায় শোরগোল জেলা তৃণমূলের অন্দরে।
সোমবার রাতে তৃণমূলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গাড়ি করে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় তাঁর গাড়ি আটকে আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। ওই নেত্র্রীর দাবি, গাড়ি ভাঙচুর করতে করতে তাঁকে গাড়ি থেকে টেনে বার করা হয়। রাস্তার উপর তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। তাঁকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসে প্রহৃত হয়েছেন দেহরক্ষী। আর এই গোটা ঘটনায় নাকি ‘নেতৃত্ব’ দিয়েছেন বাদুড়িয়া যশাইকাঠি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। তিনি রাতেই এ নিয়ে বাদুড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের ওই উপপ্রধান। অন্য দিকে, তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, আক্রান্ত নেত্রী এবং অভিযুক্ত দলের দু’টি আলাদা গোষ্ঠীর। তাঁদের মধ্যে আগে থেকে রেষারেষি ছিল। সোমবার রাতের ঘটনার নেপথ্যে গোষ্ঠীকোন্দল থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
‘আক্রান্ত’ ওই তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘এটা পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। হঠাৎ আমার গাড়ির সামনে একটা বাচ্চা চলে আসে। আমার গাড়ির চালক জোরে ব্রেক কষে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন। না হলে দুর্ঘটনা হতে পারত। আমি জানলা দিয়ে মুখ বার করে বাচ্চাটির বাবাকে বলেছি, ‘এই ভাবে বাচ্চাদের রাস্তায় কেউ ছেড়ে দেয়?’ তার পরেই এলাকায় লোকজন আমায় ঘিরে ধরেন। তাতে নেতৃত্ব দেন উপপ্রধান। আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আমাকে গাড়ি থেকে টেনে বার করে মারধর করা হয়। আমায় চড় পর্যন্ত মারা হয়েছে। আমার দেহরক্ষীকেও মারধর করা হয়।’’ পুরো ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক রোষ কাজ করেছে বলে অভিযোগ নেত্রীর। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সকলে একই রাজনৈতিক দলের সদস্য। ভুল বোঝাবুঝি থাকতেই পারে। তাই বলে এই ভাবে মারধর করা, হেনস্থা করা তো বাঞ্ছনীয় নয়।’’ অন্য দিকে, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘পুরোটাই মিথ্যা এবং বানানো কথা। উনি আমাদের দলের নেত্রী। আমি দলের এক জন সৈনিক। আমি কেন ওঁকে আক্রমণ করব?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি গন্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই সমস্যার সমাধান করতে। তখন বাদুড়িয়া থানার পুলিশ সেখানে উপস্থিত ছিল। যা ঘটেছে, সকলের সামনে ঘটেছে। পুলিশ ভাল ভাবেই জানে কী ঘটেছে।’’
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, অভিযোগকারিণী নেত্রী আগে বিজেপি করতেন। গত বছর সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানে পুলিশের সঙ্গে গন্ডগোল হয় সুকান্তের। গাড়ির বনেটের উপর পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেই সময় এক মহিলার সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়েছিলেন। তিনিই গত লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন।