শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে কার্যত বন্ধের মেজাজ পেট্রাপোল বন্দরে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
পেট্রাপোল স্থলবন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও কমিটি’ গড়ে নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন, ক্ষোভ-বিক্ষোভ চালাচ্ছিলেন বন্দর এলাকায় বিভিন্ন পেশায় জড়িত মানুষেরা। তাতে সমস্যার সুরহা না হওয়ায় সোমবার কর্মবিরতি পালন করা হল। এর ফলে এদিন পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে পণ্য রফতানি, আমদানির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দোকানপাট মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, হোটেল রেস্তরাঁ সব বন্ধ ছিল। কার্যত অলিখিত বন্ধের চেহারা নেয় বন্দর এলাকা। যানবাহনের অভাবে সমস্যায় পড়েন দু’দেশের যাত্রীরা।
লকডাউনে ব্যাহত হয়েছিল পেট্রাপোল বন্দরের সঙ্গে জড়িত বহু মানুষের জীবিকা। এখন সীমান্ত বাণিজ্য এবং দু’দেশের মধ্যে যাত্রী পরিবহণ স্বাভাবিক হয়ে এলেও বন্দরের কাজের সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই অভিযোগ, আর্থিক সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে ট্রাক চালক, খালাসি, শ্রমিক-সহ নানা পেশার মানুষ আছেন। তাঁরা ‘পেট্রাপোল স্থলবন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও কমিটি’ গড়ে নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছেন। কমিটির আহ্বায়ক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বনগাঁয় কোনও শিল্প নেই। কয়েক হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা বন্দরের উপরে নির্ভরশীল। অভিবাসন ও বিএসএফের অসহযোগিতার ফলে অনেকেই এখনও কর্মহীন। আমাদের আবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সম্ভব সমস্যার সুরাহা করুক। না হলে বৃহত্তর আন্দোলন চলবে।’’
পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে যাঁরা যাতায়াত করেন, তাঁদের মালপত্র বহনের কাজে যুক্ত আছেন শ’চারেক শ্রমিক। করোনা পরিস্থিতিতে কয়েক মাস কার্যত বন্ধ ছিল দু’দেশের মধ্যে মানুষজনের যাতায়াত। সম্প্রতি ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে যাত্রী চলাচল। কিন্তু অভিযোগ, কুলিদের মালপত্র বহনের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁদের দাবি, মূলত বিএসএফ, অভিবাসন ও ‘ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি’ তাঁদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন শ্রমিকদের অভিবাসন ও শুল্ক দফতরের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ পর্যন্ত যেতে দিচ্ছে না বিএসএফ।
সমস্যায় ভুগছেন ট্রাকের টালক, খালাসিরা। চালকেরা জানালেন, এত দিন পণ্য খালি হতে দেরি হলে চালক-খালাসিরা বেনাপোলে ট্রাক রেখে এ দেশে চলে আসতেন। কারণ, বেনাপোলে খাওয়া-থাকা, ওষুধ, শৌচাগারের অভাব আছে। কিন্তু এখন সেটাও হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছে বেনাপোলেন। ট্রাক চালকেরা বলেন, ‘‘বেনাপোলে গিয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে ওখানে ডাক্তার দেখানোর সুযোগ নেই। আমরা চাই, আগের মতো ট্রাক চালকদের এ দেশে আসতে দেওয়া হোক। না হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পণ্যখালি করার ব্যবস্থা করা হোক।’’
পেট্রাপোল অভিবাসন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকা আমরা মেনে চলছি। আমাদের করণীয় কিছু নেই। বিএসএফ এখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে। ট্রাক চালকদের সমস্যার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy