‘মৈত্রী দুয়ার’ চালু হওয়ার পরে ‘বাণিজ্য বাড়ল’ পেট্রাপোলে। ট্রাকের চলাচল দ্রুত ও মসৃণ হওয়াতেই এই সাফল্য বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মৈত্রী দুয়ার চালু হওয়ার পরে দু’দেশের মধ্যে পণ্য রফতানি ও আমদানি ট্রাকের চলাচল দ্রুত ও মসৃণ হয়েছে। আগে গড়ে ৩৫০-৪০০টি ট্রাক পণ্য রফতানি হত। এখন ৪৫০-৪৭৫টি ট্রাক রফতানি করছে।’’ পেট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার ম্যানেজার কমলেশ সাইনিও জানালেন, এটি চালু হওয়ার পরে রফতানি বেড়েছে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থলপথে বাণিজ্যে আরও গতি আনতে গত বছর অক্টোবর মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পেট্রাপোল সুসংহত চেকপোস্ট এসে মৈত্রী দুয়ারের উদ্বোধন করেন। চেকপোস্টের মধ্যে পণ্য রফতানি ও আমদানি ট্রাক চলাচলের জন্য চারটি চওড়া রাস্তা নিয়ে তৈরি এই মৈত্রী দুয়ার। দু’টি রাস্তা দিয়ে রফতানি ও দু’টি রাস্তা দিয়ে আমদানির ট্রাক চলাচল করছে।
বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে চেকপোস্টের মধ্যে থাকা দু’টি রাস্তা দিয়ে রফতানি ও আমদানির ট্রাক চলাচল করত। ফলে সময় তুলনায় বেশি লাগত। কোনও কারণে পথে ট্রাক খারাপ হয়ে গেলে মেরামত না হওয়া পর্যন্ত সব ট্রাকের চলাচল বন্ধ হয়ে যেত। দীর্ঘ লাইন পড়ত। যানজট হত। হঠাৎ কোনও ট্রাকের পণ্য পরীক্ষার প্রয়োজন হলেও ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকত। এখন সে সমস্যা মিটেছে। ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠন সূত্রের খবর, বাংলাদেশের পরিস্থিতির কারণে মাঝে কিছু দিন রফতানি কমলেও এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে দৈনিক গড়ে ৪৫০-৪৭৫টি ট্রাক পণ্য রফতানি করছে।
বাণিজ্য কেন্দ্রের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, মৈত্রী দুয়ার শুরুর আগে থেকেই বাণিজ্যে গতি আনার কাজ শুরু হয়েছিল। কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার থাকার সময়ে ২০১১ সালের অগস্টে পেট্রাপোল বন্দরে সুসংহত চেকপোস্ট (আইসিপি) তৈরির শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাণিজ্যের জন্য আধুনিক পরিকাঠামো থাকা সুসংহত চেকপোস্টটি চালু হয় ২০১৬ সালে। বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই চেকপোস্ট তৈরি হওয়ার পরে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে পণ্য রফতানির কাজে গতি এসেছে।
সুসংহত চেকপোস্টের সাফল্যের কথা গত বছর উল্লেখ করেন অমিত শাহ নিজেও। তিনি জানান, সুসংহত চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ সাড়ে ৩০ হাজার কোটি ছাড়িয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করে, ‘‘২০১৬-১৭ সালে পেট্রাপোল দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।’’ বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলপথে বাণিজ্যের ৭০ শতাংশই যে এই বন্দর দিয়ে হয়, তা-ও জানান শাহ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)