Advertisement
E-Paper

ছোট ১ টাকার কয়েন নিয়ে বিভ্রান্তি 

হকার, বাস-ট্রামের কন্ডাক্টর, এমনকী ভিখিরিদেরও খুচরো দিলে চটে লাল। নোটের বদলে যেখানে ‘বাটা’ (কমিশন) দিয়ে খুচরো কিনতে হত ছোট দোকানদার, বাস-অটো মালিকদের, সেখানে খুচরোর পাহাড় নিয়ে এখন তাঁরাই আতান্তরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৩

দিন কয়েক আগেও পথেঘাটে খুচরো নিয়ে বেজায় অশান্তি চলত। আর এখন? হকার, বাস-ট্রামের কন্ডাক্টর, এমনকী ভিখিরিদেরও খুচরো দিলে চটে লাল। নোটের বদলে যেখানে ‘বাটা’ (কমিশন) দিয়ে খুচরো কিনতে হত ছোট দোকানদার, বাস-অটো মালিকদের, সেখানে খুচরোর পাহাড় নিয়ে এখন তাঁরাই আতান্তরে। ব্যাঙ্কেও খুচটরো নেওয়া হচ্ছে না বলে অনেকের অভিযোগ। বহু ব্যাঙ্কের শাখা অফিসগুলির বক্তব্য, দশ-বিশ হাজার টাকার খুচরো গোনার লোকের অভাবের জন্য অনেক সময়ে তা নেওয়া হয় না। তবে খুচরোয় লেনদেনে কেউ অস্বীকার যেন না করেন।

বিশেষ সমস্যা হচ্ছে ছোট ১ টাকার কয়েন নিয়ে। কলকাতা শহরে সমস্যা তেমন না হলেও বনগাঁ, বারাসত, ডায়মন্ড হারবার, ইছাপুরের মতো নানা জায়গায় রটে গিয়েছে, ছোট ১ টাকার কয়েন নেওয়া যাবে না। ৫ টাকার পান কিনতে গিয়ে ৫টি ছোট কয়েন দিয়েছিলেন শ্যামনগরের লক্ষ্মী পাল। দোকানি জানিয়ে দিলেন, তিনটে পর্যন্ত ছোট কয়েন নেওয়া যেতে পারে। বাকি ২ টাকার কয়েনই দিতে হবে। গজগজ করছিলেন লক্ষ্মীদেবী। বনগাঁর এক অটো চালক তো সাফ জানিয়ে দিলেন, ছোট ১ টাকার কয়েন নিচ্ছেন না। শুরু শুরুতে নাকি তাঁর আপত্তি ছিল না। কিন্তু গত দু’মাস ধরে অন্য কেউ নিতে চাইছে না বলে তিনিও আর ছোট কয়েন নিতে পারছেন না। দিন কয়েক আগে ডানলপ থেকে সোদপুর পৌঁছে অটো ভাড়া দিতে গিয়ে খুচরো নিয়ে বিবাদে রীতিমতো থানা পুলিশ করেছেন বরাহনগরের সোমা বসু। সোমাদেবীর অভিযোগ, তিনি ১ ও ২ টাকার কয়েন দিয়ে ভাড়া মেটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চালক নিতে রাজি হননি। উল্টে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। ব্যারাকপুর থেকে উত্তরপাড়ায় নদী পেরিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন সমীর ঘোষ। তিনিও বলেন, ‘‘অটো বাস কোথাও খুচরোতে ভাড়া নিতে চায় না। নিলেও বিরক্ত হন।’’যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ নিয়ে কোনও নির্দেশিকা দেয়নি। আইনজীবীরাও জানাচ্ছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কোনও কয়েন বা নোটকে অচল বলে ঘোষণা না করলে তা নিতে অস্বীকার করা এবং বিভ্রান্ত করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু বাস্তবে সে কথা শুনছে কে?

ব্যারাকপুর শহরের এক পান দোকানি বলেন, ‘‘এক ঝুড়ি খুচরো জমে আছে। ব্যাঙ্কে জমা করতে গিয়েছিলাম। নিতে চায়নি। তাই ১, ২ টাকার কয়েন এড়াতে চাইছি। তবে কেউ লজেন্স বা পান মসলা কিনলে ১, ২ টাকা নিতে হচ্ছে। আমরা তখন বলছি, ১০ টাকার নোট দিন খুচরো করে দিচ্ছি।’’

তবে নিছক গুজবের বসে এই বিভ্রান্তি তৈরি করার প্রতিবাদে সচেতনতা গড়ার কথা বলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্যারাকপুরের প্রবীণ বাসিন্দা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজার তপন রায় বলেন, ‘‘এগুলি নিছক গুজবের বশে বিভ্রান্তি তৈরি করা। খুচরো নিতে না চাইলে মেনে নেবেন না। আমাদেরকেই সচেতন হতে হবে।’’

Coin Trouble One rupee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy