প্রতীকী ছবি
সতেরো বছর আগে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটি পরিচালনার ভার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জেলা পরিষদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের মধ্যেই ছিল হাসপাতালটির গঙ্গাপ্রাপ্তির বীজ— এমনটাই মনে করছেন গোবরডাঙার একটা বড় অংশের মানুষ।
২০০০ সালের ৪ অগস্ট স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দফতরের এমএস শাখার সিদ্ধান্ত অনুসারে হাসপাতালটি এক বছরের জন্য জেলা পরিষদকে হস্তান্তর হয়। ২০০১ সালের ১৭ জানুয়ারি হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
হাসপাতালটি জেলা পরিষদের হাতে দেওয়া হতে পারে জানতে পেরে গোবরডাঙার মানুষ আপত্তি জানিয়েছিলেন। গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদ সে সময়ে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এলাকায় বন্ধ পালন করে। প্রতিবাদ সভা, মিটিং-মিছিল হয়।
পরিষদের সহ সভাপতি পবিত্রকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে ছিলাম, জেলা পরিষদ হাসপাতাল পরিচালনা করতে টাকা পাবে কোথা থেকে? কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার টাকা না দিলে তো তারা টাকা পাবে না। আর সরকারই যখন টাকা খরচ করবে, তা হলে কেন হাসপাতালটি স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে থাকবে না?’’
তা সত্ত্বেও হাসপাতালে চালু হয় অপারেশন থিয়েটার, ৩০টি শয্যা, রোগীরা দিনরাত পরিষেবাও পাচ্ছিলেন। ছিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। নানা অসুবিধার মধ্যেও হাসপাতালটি চলছিল। এলাকার প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ চিকিৎসা পরিষেবাও পাচ্ছিলেন।
জেলা পরিষদকে হাসপাতালটি হস্তান্তর চুক্তিতে বলা হয়েছিল, জেলাশাসকের সন্তোষজনক রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রতি বছর চুক্তি নবীকরণ হবে। পরবর্তী সময়ে হাসপাতালের অবস্থা খারাপ হতে থাকলেও জেলাশাসক কোনও রিপোর্ট দিয়েছিলেন কিনা, তা জানা নেই পৌর উন্নয়ন পরিষদের।
তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে, ২০১৩ সালে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের ক্ষমতা আসে তৃণমূলের হাতে। স্বাস্থ্য কর্মাধক্ষ্য হন জ্যোতি চক্রবর্তী। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ।
এলাকার মানুষ ফের হাসপাতালটি স্বাস্থ্য দফতর যাতে নেয় সে জন্য আন্দোলন শুরু করেন। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দিয়ে তাদের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করা হয়।
কেন বন্ধ হয়ে গেল অন্তর্বিভাগ?
জ্যোতিবাবু বলেন, ‘‘পাঁচজন চিকিৎসকের মধ্যে দু’জন অবসর নেন। একজন অন্যত্র চলে যান। কোনও সার্জেন ছিলেন না। ফলে অপারেশন থিয়েটার চালু রাখা যায়নি।’’
তাঁর কথায়, ‘’জেলা পরিষদের নিয়ম অনুসারে, জেলা পরিষদ নিযুক্ত স্থায়ী বা অস্থায়ী কোনও কর্মীকে ২১ হাজার টাকার বেশি বেতন দেওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া, এখানে কাজ করলে বিএমওএইচ বা এসিএমওএইচ হওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy