Advertisement
E-Paper

হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি দান

বছর কয়েক আগে দু’টি হাসপাতাল তৈরির জন্য দেড় কোটি টাকা পেয়েছিল বাদুড়িয়া পুরসভা। সেই টাকার অর্ধেক খরচ করে একটি হাসপাতাল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু উপযুক্ত জমি না পাওয়ায় আর একটি হাসপাতাল তৈরির কাজ আটকে ছিল।

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০২:১৪

বছর কয়েক আগে দু’টি হাসপাতাল তৈরির জন্য দেড় কোটি টাকা পেয়েছিল বাদুড়িয়া পুরসভা। সেই টাকার অর্ধেক খরচ করে একটি হাসপাতাল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু উপযুক্ত জমি না পাওয়ায় আর একটি হাসপাতাল তৈরির কাজ আটকে ছিল। সেই সমস্যা মেটাতেই এগিয়ে এলেন বাদুড়িয়ার পুঁড়ো গ্রামের বাসিন্দা পেশায় ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী সুকুমার ঘোষ। হাসপাতালের জন্য তিনি দান করলেন প্রায় সাড়ে ৫ কাঠা জমি। সেই জমিতেই মাথা তুলবে নতুন হাসপাতাল।

ভৌগোলিক ভাবে বাদুড়িয়া পুর এলাকার দু’টি ভাগ। ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ইছামতীর এক পাড়ে ১২টি ওয়ার্ড। অন্য পাড়ে বাকি ৫টি। যে দিকে ওয়ার্ড সংখ্যা বেশি, সেখানে ইতিমধ্যেই একটি হাসপাতাল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু যে দিকে ৫টি ওয়ার্ড অবস্থিত সেখানেই জমি সমস্যা দেখা গিয়েছিল। অথচ, সরকারি পরিষেবা এবং পরিকাঠামোর দিক থেকে ওই ৫টি ওয়ার্ড বাদুড়িয়া পুর এলাকায় কম উন্নত বলে পরিচিত।

সুকুমারবাবুর কথায়, ‘‘পুরসভা সূত্রে শুনেছিলাম, জমি না পাওয়ায় সরকারি টাকা ফেরত যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অথচ আমাদের গ্রামে সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা নেই বললেই চলে। আমাদের কোনও সন্তান নেই। যা রোজগার করি তাতে স্বামী-স্ত্রীর চলে যায়। তাই আমরা জমি দানের সিদ্ধান্ত নিই।’’

সুকুমারবাবু জানান, তাঁদের এলাকায় রাতে কেউ অসুস্থ হলে কয়েক কিলোমিটার দূরে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। বছর কয়েক আগে স্ত্রী নমিতাও একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে গাড়ি ভা়ড়া করে বসিরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন চিকিৎসকেরা জানান, নমিতাদেবীর ডেঙ্গি হয়েছে। তাঁকে আনতেও দেরি হয়ে গিয়েছে। যে বার স্ত্রীকে বাঁচিয়ে ফিরিয়ে আনতে পারলেও সুকুমারবাবু ঠিক করেন, সুযোগ পেলে গ্রামে সরকারি চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। সেই সুযোগও এসে গেল।

ইতিমধ্যেই জমির দানপত্র তৈরি করে পুরসভার হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সুকুমারবাবুর দান করা জমির বাজার মূল্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।

নতুন হাসপাতালে কী পরিষেবা মিলবে?

বাদুড়িয়া পুরসভার স্বাস্থ্য অফিসার অনিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালে পুরো এবং আংশিক সময়ের জন্য দু’জন চিকিৎসক থাকবেন। এ ছাড়াও থাকবেন দু’জন নার্স, এক জন ল্যাব টেকনিশিয়ান, এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী এবং এক জন পাবলিক হেলথ ম্যানেজার। আপাতত হাসপাতালে পর্যবেক্ষণের জন্য দু’টি শয্যা রাখা হবে। থাকবে জরুরি বিভাগ। প্রাথমিক চিকিৎসার বেশিরভাগ ওষুধ বিনামূল্য দেওয়া হবে।’’

বাদুড়িয়ার পুরপ্রধান তুষার সিংহ বলেন, ‘‘মানুষের চাহিদার কথা ভেবেই ইছামতীর দু’পাড়ে দু’টি হাসপাতালের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সুকুমারবাবু জমি দেওয়ায় জন্যই সেই পরিকল্পনা সম্ভব হয়েছে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দোতলা যে হাসপাতালটি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে, সেখানে ২০টি ঘর রয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যেই হাসপাতালটি থেকে পরিষেবা মিলবে বলে আশা করছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

Baduria Hospital project donated land
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy