Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
road

Road: স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে রাস্তা তৈরি গ্রামে

মগরাহাটের মাহিতালাব দক্ষিণপাড়ায় যাতায়াতের মাটির রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বিভাগীয় দফতরে জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

করোনাবিধি না মেনে শনিবার আরামবাগের রবীন্দ্রভবনে জেলা আইএনটিটিইউসি-র ডাকে অটো এবং ই-রিকশাচালকদের সংগঠনের ভিড়ে ঠাসা আলোচনাসভা। 

করোনাবিধি না মেনে শনিবার আরামবাগের রবীন্দ্রভবনে জেলা আইএনটিটিইউসি-র ডাকে অটো এবং ই-রিকশাচালকদের সংগঠনের ভিড়ে ঠাসা আলোচনাসভা।  নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মগরাহাট শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২২ ১০:২৬
Share: Save:

বহু বছর ধরে যাতায়াতের রাস্তা খালের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। বর্ষার সময়ে বুকসমান জল ঠেলে যাতায়াত করতে হয়। আবার গরমে জল নেমে গেলে খানাখন্দে ভরা রাস্তায় চলাফেরা করা বিপজ্জনক।

মগরাহাটের মাহিতালাব দক্ষিণপাড়ায় যাতায়াতের মাটির রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বিভাগীয় দফতরে জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে গ্রামের মহিলা-পুরুষ স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছেন।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মগরাহাট ২ ব্লকের মগরাহাট পশ্চিম পঞ্চায়েতে বছর তিরিশ আগে মাহিতালাব গ্রামের কিছু বাসিন্দা মগরাহাট খাল-লাগোয়া সুতিখাল পাড়ে বসবাস শুরু করেন। পরে বসতি বাড়ে। বর্তমানে প্রায় ১০০ পরিবার থাকেন সেখানে। যাতায়াতের রাস্তা, সুতিখালের পাড় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় পাড়ের মাটি ধুয়ে গিয়ে প্রায় খালের সঙ্গে মিশে গিয়েছে রাস্তা। এমনিতেই নিচু এলাকা। বর্ষায় বেশি বৃষ্টি হলে জল জমে যায়। সে সময়ে প্রায় আধ কিলোমিটার লম্বা ওই রাস্তায় কোথাও কোথাও বুকসমান, কোমরসমান জল দাঁড়িয়ে যায়। জমা জল নামতে কয়েক মাস লেগে যায়।

বছরের এই ক’মাস ভোগান্তির শেষ থাকে না বাসিন্দাদের। বাড়ি থেকে জল ঠেলেই যাতায়াত করতে হয়। ক’মাস বাড়ি থেকে গামছা, লুঙ্গি পরে মোড়ের মাথায় গিয়ে পোশাক পাল্টাতে হয়। মহিলারা মোড়ের পাশে প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে পোশাক পাল্টান। বছরের ওই সমস্ত সময়ে পরিবারে সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়। কারণ, আত্মীস্বজনেরা আসতেই পারে না। বাড়ির কচিকাঁচারা স্কুলে বা গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যেতে পারে না। মাসের পর মাস জল-কাদা ঠেলে যাতায়াত করতে গিয়ে চর্মরোগ হয় অনেকের। কাদা রাস্তায় পিছলে পড়েন অনেকে। ঘরে সাপের উপদ্রব বাড়ে। বাধ্য হয়ে ঘরবাড়ি ফেলে অনেকে আত্মীয়ের বাড়িতে ওই কয়েক মাস আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।

এই পরিস্থিতে রাস্তাটি সারানোর জন্য পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসন সব দফতরে জানানোর পরেও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। পাড়ার মহিলা-পুরুষেরা কোদাল-ঝুড়ি নিয়ে মাটি কেটে রাস্তা তৈরির কাজে নেমে পড়েছেন।

শনিবার দুপুরে ঝুড়িতে মাটি তুলে রাস্তায় ফেলছিলেন সুরাইয়া বিবি। জানালেন, বছরের পর বছর ধরে এই বেহাল রাস্তায় যাতায়াত করা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষায় বুকসমান জল জমে থাকে। আবার জল নেমে গেলে নিচু, এবড়ো-খেবড়ো রাস্তায় চলাফেরা করতে সমস্যা হয়। রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে দুর্ভোগের শেষ থাকে না।

বর্ষায় ক’মাস সপরিবার পাশের বাঁকিপুর গ্রামে উঠেছিলেন সালেমা বিবি। তিনি জানালেন, জলে ডোবা রাস্তায় যাতায়াত করার ভয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। জল নেমে যাওয়ার পরে আবার নিজের বাড়িতে ফিরেছেন।

এদিন রাস্তা তৈরির কাজে হাত লাগাতে দেখা গেল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আরিফা খাতুনকেও। সে জানায়, বর্ষায় রাস্তা জলের তলায় ডুবে থাকায় স্কুলে বা পড়তে যেতে পারে না। আবার জরুরি কাজে স্কুলে যেতে হলে মোড়ে গিয়ে পোশাক পাল্টাতে হয়।

গ্রামের লোকজন জানালেন, এত বড় রাস্তার পুরো কাজ করা হয় তো সম্ভব হবে না। প্রশাসন যদি কিছুটা সাহায্য করে, তা হলে রাস্তা পুরোটাই সংস্কার হয়ে যাবে।

মগরাহাট ২ বিডিও শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘ওই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেব।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE