E-Paper

কটালের জেরে বহু নদীবাঁধে ধস, আতঙ্ক

পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুরেও ভাঙা নদীবাঁধ দিয়ে গ্রামে জল ঢুকেছে। সাগরের কষতলায় বাঁধের একাংশে ধস নামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৪ ১০:১১
প্লাবিত কাকদ্বীপের ত্রিলোকচন্দ্রপুর এলাকা।

প্লাবিত কাকদ্বীপের ত্রিলোকচন্দ্রপুর এলাকা। ছবি: সমরেশ মণ্ডল।

বেহাল নদীবাঁধ দিয়ে নোনা জল ঢুকে প্লাবিত হল কাকদ্বীপের ৮ নম্বর ত্রিলোকচন্দ্রপুর এলাকা। ঘটনাটি বুধবার সকালের। প্রায় ৫০টি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে ত্রিলোকচন্দ্রপুর এলাকার মুড়িগঙ্গা নদীবাঁধের প্রায় ১০ ফুট অংশ ভেঙে গিয়েছিল। প্রশাসন জেনেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। পূর্ণিমার কটালে জলস্তর বাড়বে বলে প্রশাসন আগাম সতর্ক করেছিল। জোয়ারে জলস্তর বেড়েই ত্রিলোকচন্দ্রপুর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদীর জল বাড়তেই ওই ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢুকছে বলে অভিযোগ। গ্রামের বাসিন্দারা ঘরের জিনিসপত্র খাটের উপরে তুলে দিয়ে বাইরে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ভাবেই চলছে দিনের পর দিন। ভাটা শুরু হলে জল নেমে যাচ্ছে। তখন আবার যে যাঁর বাড়িতে ফিরছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। স্থানীয় গৃহবধূ অনু দাস বলেন, ‘‘ছোট শিশুদের নিয়ে সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। নদীর জল বাড়তে শুরু করলেই পরিবারের সকলকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। তবে দিনের চেয়ে রাতের বেলায় সব থেকে বেশি সমস্যা হয়। জল ঢুকে গেলে বাড়িতে রান্না করার উপায় থাকে না। জোয়ার আসার আগেই রান্না করে খাওয়াদাওয়া সেরে ফেলতে হয়। গবাদি পশু আছে। সেগুলিকে নিয়েও চিন্তা হয়।

পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুরেও ভাঙা নদীবাঁধ দিয়ে গ্রামে জল ঢুকেছে। সাগরের কষতলায় বাঁধের একাংশে ধস নামে। জরুরি ভিত্তিতে ওই বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। রামকৃষ্ণ পঞ্চায়েতের প্রধান দীপ্তি দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। দ্রুত বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে।’’

অন্য দিকে, বুধবার রাতে লট ৮-এর ৪ নম্বর ভেসেল ঘাটের কাছে মুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধে ধস নামে। রাতেই গ্রামে ঢোকে নোনা জল। পুকুর, রাস্তাঘাট জলের তলায় চলে গিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঘরবাড়িতে নোনা জল ঢুকবে বলে আশঙ্কা। গত দু’দিন ধরে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর মাটির বাঁধের একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় ধসের জেরে বড় বড় গাছ নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। ওই বাঁধ লাগোয়া কয়েকশো পরিবারের বাস। দ্রুত বাঁধ মেরামতি না হলে সেটি ভেঙে জল ঢোকার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। এ ছাড়াও, ওই ব্লকের দ্বারিকনগর, গণেশনগর, নারায়ণগঞ্জ, দেবনগর, বুধাখালি, ঈশ্বরীপুর, মৌসুনিতে বাঁধ বেহাল। নিম্নচাপের পাশাপাশি পূর্ণিমার কটালের জেরে নদী ও সমুদ্রের জলস্তর বেড়েছে। যে কোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে প্লাবনের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নামখানা ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধ মেরামতির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় নদীবাঁধের সমস্যার কথা সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। ব্লক প্রশাসন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে।’’ সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘কটাল থাকায় সুন্দরবনের যে সমস্ত জায়গায় নদীবাঁধগুলি বেহাল হয়ে পড়েছে, তা দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। আতঙ্কের কিছু নেই, প্রশাসন তৈরি আছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

kakdwip

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy