—প্রতীকী চিত্র।
রান্নাঘরে গিয়ে সবে গ্যাস সিলিন্ডারটি ‘অন’ করেছিলেন মা। পাশের ঘরে থাকা মেয়ে মায়ের আর্তনাদ শুনে বেরিয়ে দেখল, রান্নাঘর জুড়ে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। সারা গায়ে আগুন নিয়ে ছটফট করছেন মা। চোদ্দো বছরের মেয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ল ফ্ল্যাটে। মা এবং মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হলেন প্রতিবেশী এক মহিলা।
সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরের গোপাললাল ঠাকুর রোডের একটি চারতলা আবাসনে। একটি বাড়ি পরেই পেট্রোল পাম্প থাকায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। তবে ফ্ল্যাটটি পুরো পুড়ে গিয়েছে। পুলিশ জানায়, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ঝুমা দাসকে (৪৫) আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং তাঁর মেয়ে খুকুমণি দাসকে বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিবেশী জয়া ঘোষ জখম হলেও তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দিনের ব্যস্ত সময়ে এই ঘটনায় গোপাললাল ঠাকুর রোডে কিছু ক্ষণ যানজট হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বরাহনগর বাজার এলাকায় ওই আবাসনের চারতলার একটি ফ্ল্যাটে মেয়েকে নিয়ে থাকেন ঝুমাদেবী। তাঁর স্বামী কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ তিনি রান্নার আয়োজন করছিলেন। তখন গ্যাস সিলিন্ডার চালু করে আভেন জ্বালাতেই ঘটে বিপত্তি। মায়ের চিৎকার শুনে দশম শ্রেণির ছাত্রী খুকুমণি পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। এর পরে গোটা ফ্ল্যাটেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন।
প্রতিবেশীরা জানান, চিৎকার শুনে প্রতিবেশী জয়া ঘোষ মা-মেয়েকে বাঁচাতে গেলে তিনিও জখম হন। ফ্ল্যাট থেকে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখে চেঁচামেচি জুড়ে দেন আশপাশের লোকজনও। ওই আবাসনের বাসিন্দা দিলীপ সরকার বলেন, ‘‘আমি ও আমার স্ত্রী ওঁদের বার করার চেষ্টা করি। কিন্তু আগুনের তাপ ভয়ঙ্কর ছিল।’’ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও যুবকেরা মুখে গামছা, রুমাল বেঁধে চারতলায় উঠে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে আসে দমকল ও বরাহনগর থানার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, প্রথমে তিন জনকেই বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঝুমাদেবীকে আরজিকরে স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁর পিঠ, বুক ও হাত মিলিয়ে শরীরের প্রায় ৩০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। তাঁর বোন শিবানী সাউ বলেন, ‘‘দিদির বাড়িতেই যাচ্ছিলাম। আবাসনের সামনে গিয়ে দেখি ভিড়। শুনলাম দিদি ও বোনঝি পুড়ে গিয়েছে।’’ প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান, গ্যাস লিক করেই এই ঘটনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy