Advertisement
০৫ মে ২০২৪
হাবরায় ধৃত স্বামী

পণ না-মেলায় বধূকে ছাদ থেকে ফেলে খুনের নালিশ

দিন কয়েক আগে হাবরার জানাপুলের এক বধূকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এ বার দাবিমতো পণ না-মেলায় নকফুল এলাকার কুচলিয়া গ্রামের মিঠু দে (৩৩) নামে এক বধূকে বাড়ির দোতলার ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে।

শোকার্ত বোন ও দিদা। ইনসেটে মিঠুদেবী। নিজস্ব চিত্র।

শোকার্ত বোন ও দিদা। ইনসেটে মিঠুদেবী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবরা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১৯
Share: Save:

ফের হাবরায় পণের জন্য বধূহত্যার অভিযোগ উঠল।

দিন কয়েক আগে হাবরার জানাপুলের এক বধূকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এ বার দাবিমতো পণ না-মেলায় নকফুল এলাকার কুচলিয়া গ্রামের মিঠু দে (৩৩) নামে এক বধূকে বাড়ির দোতলার ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযুক্ত সিদ্ধার্থ দে’কে রবিবার গ্রেফতার করেছে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে গুরুতর জখম অবস্থায় মিঠুকে প্রথমে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে আর দু’টি হাসপাতাল ঘুরে তাঁকে স্থানান্তরিত করানো হয়েছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। শনিবার দুপুরে মিঠু সেখানেই মারা যান। রবিবার তাঁর বাবা মনোরঞ্জন দাস জামাইয়ের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। রবিবারই কুচলিয়া গ্রাম থেকে সিদ্ধার্থকে পুলিশ ধরে। পুলিশের কাছে অভিযোগে মনোরঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, বুধবার মেয়ের শ্বশুরবাড়ি এলাকার এক জনের কাছ থেকেই তিনি মেয়ের আশঙ্কাজনক অবস্থার কথা জানতে পারেন। পুলিশ জানায়, খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মনোরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘সাধ্যমতো জামাইকে টাকা, আসবাবপত্র দিয়েছি। তা সত্ত্বেও মেয়ের উপরে অত্যাচার বন্ধ হয়নি। ওখানকার মানুষের কাছ থেকে জেনেছি সিদ্ধার্থই মেয়েকে ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল।’’ তবে, পুলিশের কাছে সিদ্ধার্থ দাবি করেছে, তার স্ত্রী ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার কথা সে শ্বশুরবাড়িতে জানানোর জন্য ফোন করলেও তা ধরা হয়নি। সে নিজেই স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে গাইঘাটার আম্বুলা গ্রামের বাসিন্দা মিঠুর সঙ্গে কুচলিয়ার সিদ্ধার্থর বিয়ে হয়। সিদ্ধার্থ কোনও কাজ করত না। মিঠু সেলাইয়ের কাজ করে সংসার চালাতেন। তাঁদের চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মিঠুর স্বামী ও শাশুড়ি পণের জন্য নির্যাতন চালাত। কিন্তু সামান্য রোজগারের জন্য সব সময় জামাইয়ের চাহিদা মেটাতে পারতেন না পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি মনোরঞ্জনবাবু। শ্বশুরবাড়িতে মারধরের জন্য মিঠুকে একবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল বলেও অভিযোগ। সে বার মেয়েকে নিজের কাছে এনে রেখেছিলেন মনোরঞ্জনবাবু। সে বার সিদ্ধার্থ সকলের হাতে-পায়ে ধরে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় বলে মিঠুর বাপেরবাড়ির লোকজনের দাবি।

মিঠুর বোন পূর্ণিমা বলেন, ‘‘দিদি ভাল কাজ খুঁজছিল। ছেলেকে নিয়ে সে অন্যত্র চলে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু ওরা ওঁকে মেরে ফেলল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dowry Murder Habra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE