Advertisement
E-Paper

তারস্বরে মাইকের প্রতিবাদ করায় মারধর শ্রমিকদের

বছরের শুরুর দিনটা নির্বিঘ্নে কাটল না টাকিতে। তারস্বরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করে প্রহৃত হলেন ইটভাটার কয়েক জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে দু’জন মহিলাও আছেন। দু’জনকে পাঠানো হয়েছে আরজিকরে। অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়।

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৮
আহত: হাসনাবাদে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় জখম। — নিজস্ব চিত্র

আহত: হাসনাবাদে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় জখম। — নিজস্ব চিত্র

বছরের শুরুর দিনটা নির্বিঘ্নে কাটল না টাকিতে। তারস্বরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করে প্রহৃত হলেন ইটভাটার কয়েক জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে দু’জন মহিলাও আছেন। দু’জনকে পাঠানো হয়েছে আরজিকরে। অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়।

টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় অবশ্য বিষয়টিকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ই বলছেন। তাঁর দাবি, এ বার ডিজে রুখতে অত্যন্ত কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে পুলিশ ও পুরসভার তরফ থেকে। পুর এলাকায় ঢোকার রাস্তাগুলিতে ছিল পুলিশের নাকা। ডিজে বক্স দেখলে তার খুলে দেওয়া হয়েছে।

তারপরেও মারপিটের ঘটনা ঘটল কী ভেবে? সোমনাথ বলেন, ‘‘এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। পুলিশ দেখছে।’’

কী ঘটেছে মঙ্গলবার?

টাকির পুরনো বিএসএফ ক্যাম্পের কাছে, সুভাষনগর বিনোদ কলোনি এলাকার একটি ইটভাটা এলাকায় পিকনিক চলছিল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বেলা আড়াইটে নাগাদ সেখানে হঠাৎ তারস্বরে মাইক বাজানো শুরু করে কিছু যুবক। ইটভাটার শ্রমিকেরা আওয়াজ কমাতে বললে তাদের ইটপাটকেল ছোড়া হয়। প্রতিবাদে সরব হন শ্রমিকরা। দু’পক্ষের মারপিট বেধে যায়। দুই মহিলা সহ ৮ জন শ্রমিক জখম হয়েছেন। ৪ জনকে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর জখম ইমান গাজি এবং পিয়ার আলি গাজিকে আরজিকরে স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশ এসে পড়ায় পিকনিক করতে আসা লোকজন পালায়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পিকনিকের দলবল কোথা থেকে এসেছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।

ইটভাটার মালিক পক্ষের তরফে মধুসূধন দাস বলেন, ‘‘মদ্যপ অবস্থায় জোরে মাইক বাজাচ্ছিল ওরা। বাধা দিলে প্রথমে ইটপাটকেল ছোড়ে। পরে রান্না করার চ্যালা কাঠ দিয়ে ভাটার ঘরে ঘরে ঢুকে শ্রমিকদের মারধর করেছে। স্বামীদের বাঁচাতে এলে মহিলাদেরও মারধর করা হয়েছে।’’ খবর দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ আসতে দেরি করেছে বলে তাঁর অভিযোগ। ভাটা মালিকদের তরফে আরও অভিযোগ, শ্রমিকদের রান্না করা খাবার ফেলে দেয় হামলাকারীরা। অফিস ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। অফিস থেকে লক্ষাধিক টাকাও লুট হয়েছে।

টাকি পুরসভা অবশ্য দাবি করছে, শব্দ-তাণ্ডব রুখতে এ বার যথেষ্ট তৎপর ছিল। যে কারণে শহর এলাকায় শব্দের তাণ্ডব ঠেকানো গিয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় ডিজের দাপট ছিল অব্যাহত। পুরপ্রধানের বক্তব্য, কড়াকড়ির জেরে অনেকে এ বার টাকি এলাকা এড়িয়ে গিয়েছেন। ব্যবসায়ীরাও অনেকে জানিয়েছেন, বাজার বেশ মন্দা। তবে শব্দ-দানবের দাপট কমায় খুশি টাকির মানুষ।

পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এ বার ডিজে শহরের মধ্যে ঢুকতে দিলেও তা বাজাতে দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে অনেকে ইছামতীর ধার ছেড়ে গ্রামের দিকে চলে যাচ্ছেন।’’

টোটো চালক জীবন মণ্ডল, রতন পালের কথায়, ‘‘এ বার ব্যবসা মন্দা।’’ রাজবাড়ি ঘাটের সামনে রাখা নৌকোর মাঝি পরিমল মণ্ডল, আবেদ গাজিদের কথায়, ‘‘দুপুর গড়িয়ে গেল, সওয়ারি মিলছে না।’’ চড়ুইভাতি করতে আসা কয়েক জনের কথায়, ‘‘আজকের দিনে ডিজে বক্সের সঙ্গে রঙিন আলো না হলে পরিবেশটা জমে না। এখানকার পার্কগুলিতে এ সব বন্ধের খবর চাউর হওয়ায় ছেলে-ছোকরারা বসিরহাটে আসতে চাইছে না।’’

তবে নাগরিকদের অনেকের বক্তব্য, সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখাটা বেশি জরুরি। যদি কিছু লোক কম আসে, তবু মঙ্গল। কিন্তু হুল্লোড় যেন মাত্রা না ছাড়ায়। অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে এলাকার সমস্ত পর্যটন ব্যবসার উপরে খারাপ প্রভাব ফেলবে।

Sound Pollution New Year Celebration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy