বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার মহারাষ্ট্রে। মুম্বই থেকে তাঁর কফিনবন্দি দেহ ফিরল উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাড়িতে। পরিবারের দাবি, এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। বাংলাদেশি বলে কর্মস্থলে সন্দেহ করা হত ১৯ বছরের মোস্তাফা মিস্ত্রিকে। হেনস্থা করা হত তাঁকে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ করার চিন্তাভাবনা করছে পরিবার। অন্য দিকে, দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করেছে মুম্বই পুলিশ।
সন্দেশখালি-২ ব্লক এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফা শ্রমিকের কাজ নিয়ে মাস ছয়েক আগে মুম্বই গিয়েছিলেন। গত ২৪ অক্টোবর মুম্বই থেকে পুলিশের ফোন পায় তাঁর পরিবার। জানানো হয়, রেল দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন তরুণ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। খবর পেয়ে মোস্তাফার বাবা মুম্বই যান। কিন্তু দিন দুয়েক পর হাসপাতালেই মারা যান ওই শ্রমিক। প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে মঙ্গলবার মোস্তাফার কফিনবন্দি দেহ আনা হয় সন্দেশখালির বাড়িতে। তার পরেই শুরু হয়েছে শোরগোল। অভিযোগ, বাংলার ওই শ্রমিককে বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করে হেনস্থা করা হত। তাঁর মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা কি না, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।
সন্দেশখালি-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি দিলীপ মল্লিক বলেন, ‘‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষার দাবিতে লড়াই করছেন। বাঙালিদের প্রতি এই অমানবিকতা বাংলার মানুষ ভাল ভাবে নেবে না।’’ তিনি মৃতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘বাঙালি হওয়ার কারণে এবং বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে অকালে প্রাণ গেল এই খেটে খাওয়া ছেলেটির।’’
আরও পড়ুন:
বঙ্গে এসআইআর শুরুর প্রেক্ষিতে মোস্তাফার মৃত্যু আরও আলোড়ন তৈরি করেছে এলাকায়। শাসকদলের দাবি, বাঙালি শ্রমিকেরা এখন ভিন্রাজ্যে যেতে ভয় পাচ্ছেন। সন্দেশখালির বহু মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক। বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করেন তাঁরা। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে। মৃতের পরিবারের দাবি, মোস্তাফা বাংলায় কথা বলতেন বলে সমস্যার মুখোমুখি হতেন মুম্বইয়ে। বাড়ির এক সদস্যের কথায়, ‘‘বাঙালি হওয়ার জন্য ওকে মরতে হল।’’