Advertisement
E-Paper

দম্পতিকে খুনে ধৃত ছোট জামাই

পুলিশের দাবি, এরপরেই বান্টি রামকৃষ্ণ ও তাঁর স্ত্রীকে খুন করে সম্পত্তি টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার ছক কষে। ওই দম্পতির দুই মেয়ে। এক মেয়ে আগেই মারা গিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:২৭
পুলিশের জালে ধৃতেরা। ছবি: সুদীপ ঘোষ

পুলিশের জালে ধৃতেরা। ছবি: সুদীপ ঘোষ

হাবড়ায় জোড়া খুন কাণ্ডে নয়া মোড়। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হল নিহত দম্পতির ছোট জামাই ও তার এক সাগরেদ। এর আগে ওই দম্পতির ভাইয়ের মেয়ের প্রাক্তন প্রেমিকই ছিল সন্দেহের তালিকায়। তাকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। মনে করা হয়েছিল, প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার ফলেই প্রতিশোধ নিতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে রাতের অন্ধকারে চড়াও হয়েছিল ওই যুবক। তবে এখন পুলিশ মনে করছে, সম্পত্তির লোভে লোক লাগিয়ে শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করেছে ছোট জামাই।

হাবড়ার টুনিঘাটা এলাকার লন্ডনপাড়ায় ওই ঘটনায় পুলিশ দম্পতির জামাই বান্টি সাধুকে গ্রেফতার করেছে। জামাইয়ের বন্ধু অজয় দাসও ধরা পড়েছে। বুধবার রাতে হাবড়া শহর থেকে তাদের ধরা হয়। খুনে ব্যবহৃত একটি নাইন এমএম পিস্তল এবং ২ রাউন্ড গুলিও উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের বৃহস্পতিবার বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

বারাসতের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বান্টি শ্বশুর-শাশুড়িকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল। ওই কাজের জন্য সে অজয়কে ১০ লক্ষ টাকা দেবে বলেছিল। দু’জনেই খুনের কথা স্বীকার করেছে।’’পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে নিজের বাড়িতে খুন হয়েছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্মী রামকৃষ্ণ মণ্ডল এবং তাঁর স্ত্রী লীলারানি। কাছ থেকে মাথায় এবং বুকে গুলি করা হয়েছিল। ওই ঘটনার পরে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় তন্ময় বর নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ করেছিলেন রামকৃষ্ণর ভাই। তন্ময়কে পুলিশ বারাসতের কাছে নীলগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে।

নিহতদের পরিবারের বক্তব্য ছিল, রামকৃষ্ণর ভাইয়ের মেয়ের সঙ্গে তন্ময়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১৮ সালে মেয়েটিকে নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যায় তন্ময়। পরিবারের তরফে থানায় অপহরণের অভিযোগ করা হয়েছিল। কয়েক মাস পরে তন্ময় তরুণীকে নিয়ে দেশে ফিরে এসে নিজের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে থাকতে শুরু করে। পরে সাংসারিক অশান্তির কারণে তরুণী বাপের বাড়ি চলে আসেন। তন্ময় তাঁকে উক্ত্যক্ত করত, খুনের হুমকি দিত বলে অভিযোগ। পরিবারের বক্তব্য ছিল, সেই আক্রোশেই খুনের ঘটনা।

তবে তদন্তে নেমে পুলিশের কয়েকটি কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল প্রথম থেকেই। তন্ময় কেন তরুণীকে বাদ দিয়ে জ্যাঠা-জেঠিমাকে খুন করবে, তার উত্তর মিলছিল না। গ্রেফতার হওয়ার পরে তন্ময় খুনের কথা স্বীকার করেনি। তাকে জেরা করে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, খুনের পিছনে অন্য কারও হাত আছে। খোঁজ-খবর নিয়ে পুলিশ জানতে পারে, নিহত দম্পতির জামাই স্থানীয় জয়গাছি এলাকার বাসিন্দা বান্টির বাজারে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা ধারদেনা আছে। পাওনাদারেরা চাপ দিচ্ছিল। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, বান্টি শ্বশুর-শাশুড়িকে টাকা চেয়ে চাপ দিচ্ছিল। শ্বশুর-শাশুড়ি যাতে বান্টিকে টাকা দেন, সে জন্য বান্টি ওঝা-গুনিনের দ্বারস্থ হয়েছিল। ঝাড়ফুঁক-তুকতাক করে শ্বশুর-শাশুড়ির মন গলাতে চেয়েছিল। বান্টির সেই পরিকল্পনা শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে ধরা পড়ে যায়। তাঁরা বান্টিকে টাকা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।

পুলিশের দাবি, এরপরেই বান্টি রামকৃষ্ণ ও তাঁর স্ত্রীকে খুন করে সম্পত্তি টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার ছক কষে। ওই দম্পতির দুই মেয়ে। এক মেয়ে আগেই মারা গিয়েছেন। তাঁর কিশোরী মেয়ে দাদু-দিদার কাছে থাকত। বান্টি মনে করেছিল, শ্বশুর-শাশুড়িকে সরিয়ে দিতে পারলে সম্পত্তির দখল নিতে অসুবিধা হবে না।

Habra Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy