Advertisement
E-Paper

অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোট নিয়ে উত্তেজনা, পথ অবরোধ

তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল কংগ্রেস ও সিপিএমের সদস্যরা। কিন্তু ভোটাভুটি হওয়ার আগেই প্রধানের স্বামী ও কংগ্রেসের এক সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর জেরেই বাদুড়িয়ায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে বাদুড়িয়া থানার ওসি পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে ওই অবরোধ তোলে। তবে অনাস্থার পক্ষে সদস্য সংখ্যা কম থাকায় প্রধানকে অপসারণ করা সম্ভব হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:০০

তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল কংগ্রেস ও সিপিএমের সদস্যরা। কিন্তু ভোটাভুটি হওয়ার আগেই প্রধানের স্বামী ও কংগ্রেসের এক সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর জেরেই বাদুড়িয়ায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে বাদুড়িয়া থানার ওসি পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে ওই অবরোধ তোলে। তবে অনাস্থার পক্ষে সদস্য সংখ্যা কম থাকায় প্রধানকে অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে সিপিএম এবং কংগ্রেসের দাবি, সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে তৃণমূলের লোকজন পুলিশকে ব্যবহার করে প্রধানের অপসারণ আটকাল। সময় মতো মানুষ এর উত্তর দেবে।

পুলিশ ও ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের পর বাদুড়িয়ার জসাইকাটি-আটঘরা পঞ্চায়েতের ১৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূল-৭, কংগ্রেস-৪ এবং বামফ্রন্ট ৬টি আসনে জয়লাভ করে। কংগ্রেসের সমর্থনে তৃণমূলের প্রধান হন স্বান্তনা সরকার। উপপ্রধান হন কংগ্রেসের সাহানারা বিবি। পরবর্তি সময়ে বামেদের এক সদস্য তাদের দলে যোগ দেয় বলে তৃণমূলের দাবি। সম্প্রতি তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ এনে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করে বাম এবং কংগ্রেসের ৯ জন সদস্য। শুক্রবার সেই অনাস্থার উপরে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল।

এ দিকে এই ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরেই বাদুড়িয়ার হাওয়া রীতিমতো সরগরম। হুমকি দেওয়া, শ্লীলতাহানি, অপহরণের চেষ্টার নানা অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয় পুলিশের কাছে। এ দিন ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করেও গণ্ডগোলের আশঙ্কা ছিল। পঞ্চায়েত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। অবাঞ্ছিত কেউ এলে তৎক্ষণাৎ তাকে গ্রেফতার করা হবে বলেও ঘোষণা করা হয়। সকাল থেকে জসাইকাটি-আটঘরা পঞ্চায়েতের সামনে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ছিলেন বাদুড়িয়ার বিডিও তারক মণ্ডলও।

পুলিশ জানায়, প্রধান-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে তাদের কাছে অভিযোগ আছে। তা সত্ত্বেও মিছিল করে প্রধানের স্বামী অনিল সরকার পঞ্চায়েতের সামনে এলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। একই কারণে গ্রেফতার করা হয় কংগ্রেসের সদস্য ভীম মণ্ডলকে। এই পরিস্থিতিতে অনাস্থার পক্ষে অর্ধেকের বেশি সদস্য হাজির করাতে পারেনি কংগ্রেস ও বামেরা। আইনগত কারণে যার ফলে ভোটাভুটিও হয়নি।

এই ঘটনার পরে পুলিশ এবং জনতার মধ্যে বচসা থেকে ধাক্কাধাক্কি লেগে যায়। প্রতিবাদে কংগ্রেসের পক্ষে রুদ্রপুর এবং বামফ্রন্টের পক্ষে নারায়ণপুরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। তৃণমূলের পক্ষেও গ্রেফতারের প্রতিবাদে থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে তৃণমূল নেতা তুষার সিংহ বলেন, “সিপিএম এবং কংগ্রেস যৌথ ভাবে আমাদের প্রধানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে তাঁকে অপসারণের চেষ্টা করেছিল। ওদের প্ররোচনায় পড়ে পুলিশ অন্যায় ভাবে প্রধানের স্বামীকে গ্রেফতার করেছে।”

অন্য দিকে, কংগ্রেস নেতা কাজি আব্দুর রহিম দিলু বলেন, “অনাস্থায় প্রধানের অপসারণ নিশ্চিত বুঝতে পেরে আমাদের সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়। তা সত্ত্বেও বিডিও-র কাছে তাঁর ভোটাধিকার প্রয়োগের আবেদন লিখিত ভাবে জানানো হয়েছিল। কিন্তু শাসক দলের পুলিশ তৃণমূলকে সুবিধা করে দিতে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাদের একজনকে গ্রেফতার করে।”

এ বিষয়ে কংগ্রেসের পক্ষে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। পুলিশের বক্তব্য, আইন মেনেই উভয় পক্ষের অভিযুক্তদের ধরা হয়েছে।

সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম আবার বলেন, “আমরা পুলিশকে বলেছিলাম, ভীম মন্ডলের বিরুদ্ধে প্রধানের শ্লীলতাহানির অভিযোগ যদি সত্যিও হয়, তা হলেও আগে তাঁকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হোক। তারপরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু তৃণমূল এবং পুলিশের পক্ষে যে ভাবে পঞ্চায়েতের গেটে তালা ঝুলিয়ে কংগ্রেসের এক সদস্যকে ভবনে ঢোকার আগেই গ্রেফতার করা হল, তা নেহাতই উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। এ বিষয়ে আমরা আদালতে যাব।”

বামেদের কেউ তৃণমূলে যোগ দিয়েছে কিনা, তা তিনি জানেন না বলেই মন্তব্য করেছেন সেলিম। কিন্তু ওই সদস্য এ দিন ভোটাভুটিতে আসেননি। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন বাম নেতৃত্ব।

baduria vote
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy