পিকনিকে গিয়ে স্থানীয় এক দল যুবকের হাতে মারধর খেলেন জনা পনেরো কলেজ পড়ুয়া। চার জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার মাধবপুর ও গোপালনগর থানার বিভূতিভূষণ স্মৃতিঘাট এলাকায়। দু’টি থানার পুলিশই হামলাকারীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে গোপালনগরের নহাটা যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল স্মৃতি মহাবিদ্যালয় থেকে প্রায় আড়াইশো জন পিকনিক করতে গিয়েছিলেন ওই এলাকায়। অভিযোগ, প্রথমে এলাকারই কয়েক জন এসে তাঁদের কাছে মাথা পিছু ৩ টাকা করে দাবি করে। পড়ুয়ারা জানান, ফিরে যাওয়ার সময়ে কিছু টাকা দিয়ে যাবেন। সে সময়ে ফিরে যায় এলাকার ওই যুবকেরা।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় আরও কিছু ক্ষণ পরে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ কামালউদ্দিন বলেন, “নদীতে নৌকো করে দুই যুবক যাচ্ছিলেন। তাই দেখে আমাদের এক ছাত্র তাঁদের নৌকোয় চড়বে বলে ইশারা করে ডাকে। কিন্তু পাড়ে এসে তারা ছাত্রটিকে বলতে থাকে, আমাদের হাত নেড়ে ডাকলি কেন? আমরা কি মাঝি? ছাত্রটিকে মারধরও করা হয়।” তিনি জানান, অন্য ছাত্রেরা চলে আসলে দুই যুবকের এক জন পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের এক জনকে আটকে রেখে ছাত্রেরা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে আটক করে নিয়ে যায় ওই যুবককে।
অবশ্য ক্লাইম্যাক্সের তখনও বাকি ছিল। পড়ুয়াদের অভিযোগ, খাওয়া-দাওয়া সবে তখন শুরু হবে। এমন সময় গোটা কুড়ি যুবক বাঁশ, কুড়ুল, রড নিয়ে এসে তাদের উপরে হামলা চালায়। খাওয়ার সরঞ্জাম উল্টে দিয়ে কয়েকটি বাইকও ভাঙচুর করে। ছাত্রীদেরও মারধর করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে হামলাকারীরা পালায়।
কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য অলোক নন্দী বলেন, “হামলাকারীদের মধ্যে কয়েক জন দুষ্কৃতীও ছিল। সব দেখে মনে হয়, হামলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত।” বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি ছাত্র মনোজ হালদারের মাথায় চারটি সেলাই পড়েছে। আরেক ছাত্র রাকেশ দাস বলেন, “এক ছাত্রীকে ওরা মারতে যাচ্ছে দেখে আমি তাকে বাঁচাতে গেলাম। বাঁশ দিয়ে আমাকে পেটালো।” পুলিশের অনুমান, হামলাকারীরা শুভরত্নপুর, জানিপুর ও মাধবপুরের বাসিন্দা।
কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস বলেন, “পুলিশকে বলেছি দ্রুত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে।” পুলিশ জানিয়েছে, দু’জন ধরা পড়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy