Advertisement
E-Paper

ঘোজাডাঙা সীমান্ত পেরোতে গিয়ে যুবক ধৃত ঘোজাডাঙায়

অবৈধ ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করায় সন্দেহভাজন এক যুবককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিল বিএসএফ। রবিবার সন্ধ্যায় বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত থেকে মহম্মদ আজিজ নামক ওই যুবককে জওয়ানরা রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সোমবার দুপুরে বসিরহাট থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ধৃতের কাছ থেকে একাধিক জাল ভোটার পরিচয়পত্র, আধারকার্ড, ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড, মুম্বই ও হায়দরাবাদের ব্যবসায়ীদের ঠিকানা-ছবি, সৌদি আরব থেকে আসা লক্ষাধিক টাকার রসিদ, মোবাইল উদ্ধার হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২৫

অবৈধ ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করায় সন্দেহভাজন এক যুবককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিল বিএসএফ। রবিবার সন্ধ্যায় বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত থেকে মহম্মদ আজিজ নামক ওই যুবককে জওয়ানরা রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সোমবার দুপুরে বসিরহাট থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ধৃতের কাছ থেকে একাধিক জাল ভোটার পরিচয়পত্র, আধারকার্ড, ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড, মুম্বই ও হায়দরাবাদের ব্যবসায়ীদের ঠিকানা-ছবি, সৌদি আরব থেকে আসা লক্ষাধিক টাকার রসিদ, মোবাইল উদ্ধার হয়েছে।

বিএসএফের ১৪৪ নম্বর ব্যাটালিয়ানের অফিসার এম গণপতি জানান, এক দালালের সঙ্গে ঘোজাডাঙা সেতু ধরে বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছিল ওই যুবক। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয় তাদের। দালাল পালিয়ে গেলেও আজিজকে ধরা হয়। তার কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। ওই যুবক নিজেকে প্রথমে হায়দরাবাদের বাসিন্দা বলে দাবি করলেও সেখানকার ভাষা বলতে না পারায় সন্দেহ বাড়ে। জেরার মুখে যুবক তখন নিজেকে মায়ানমারের বাসিন্দা বলে দাবি করে। আজিজ জানায়, বাংলাদেশে কাকার বাড়িতে যাচ্ছিল সে।

প্রাথমিক তদন্তে জওয়ানেরা জানতে পারেন, আজিজের বাড়ি মায়ানমারের বুসিদামের কুন্দুপাড়ায়। গত আড়াই বছর আগে বাংলাদেশ হয়ে অবৈধ ভাবে সে ভারতে আসে। কিছু দিন কলকাতায় কাটানোর পরে যায় মুম্বই। সেখান থেকে হায়দরাবাদেও গিয়েছিল। আজিজের দাবি, হায়দরাবাদের বালাপুর রিফিউজি কলোনিতে থাকে সে। ছোট ভাই সোয়েফও থাকে হায়দরাবাদে। বাবা-মা থাকেন সৌদি আরবে। স্থানীয় একটি বরফ কারখানায় কাজ করে আজিজ। কলকাতায় থাকার সময়ে ভোটার পরিচয়পত্র জোগাড় করে। হায়দরাবাদে গিয়ে জাল আধারকার্ডও বানিয়ে নেয়। ওই কার্ড দেখিয়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখায় অ্যাকাউন্ট খোলে। পুলিশ জানতে পেরেছে, দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের এটিএমের নথি থেকে আজিজের একটি ব্যাঙ্ক আ্যাকাউন্টে লক্ষাধিক টাকার সন্ধান মিলেছে। এত টাকা কী করে তার অ্যাকাউন্টে এল, সে বিষয়ে আজিজ ঠিক মতো জবাব দিতে পারেনি। তার দাবি, বাবাই টাকা পাঠিয়েছিলেন। বাবা-মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের আলিকদম গ্রামে কাকা মৌলানা কাসেমের বাড়ি যাচ্ছিল সে। মানিব্যাগ থেকে পাওয়া ছবি তার ছোট ভাই সোয়েফ এবং এক বন্ধু ইসলামের বলে জানিয়েছে ওই যুবক। আজিজের দাবি, বাংলাদেশে যাওয়ার আগে দু’দিন বসিরহাটে এক দালালের বাড়িতে ছিল সে। আরও কয়েক জনকে ওই দালালের বাড়িতে থাকতে দেখেছে সে, যারা বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য এসেছিল। আজিজের সম্পর্কে বিশদে তথ্য জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের পরে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট সীমান্ত সিল করার পাশাপাশি বিএসএফের টহলদারি বেড়েছে। পুলিশের পক্ষেও সীমান্ত এলাকার সেতু, সরকারি দফতর এবং বাসস্টান্ড এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে গত কয়েক দিন ধরে বসিরহাট সীমান্তে বহু অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়ছে। রবিবার রাতেও ঘোজাডাঙা থেকে ৫ বাংলাদেশিকে বিএসএফ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এদের কাছ থেকে মোবাইল আটক হয়েছে।

অন্য দিকে, বাংলাদেশি সন্দেহে এক ইমামকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে তাঁর নাম মহম্মদ মহাবুবুর রহমান শেখ। রবিবার রাতে নদিয়ার গাংনাপুর থানার মাঝেরগ্রামের রামেশ্বরেরপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা করা হয়। বছর সাতাশ বয়েসের মহাবুবুর বাংলাদেশের নোয়াখালির গোপীনাথপুরের বাসিন্দা। সোমবার তাঁকে রানাঘাট মহকুমার আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক তাঁকে ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “এ দেশে প্রবেশের বৈধ কোনও কাগজপত্র না থাকায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।” পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে মহাবুবুর রামেশ্বরপুরের মসজিদের ইমামের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি কোরান-শরিফ খুব ভাল করে উচ্চারণ করতে পারেন। শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। মসজিদ পরিচালন কমিটির সদস্য নাসিরুদ্দিন মণ্ডল বলেন, “মহাবুবুরবাবু ভাল ও শিক্ষিত ছেলে। তাই গ্রামের মানুষ তাকে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই দায়িত্ব তিনি গুরুত্ব দিয়ে পালন করছিলেন। তার কাছে এদেশে থাকার কাগজ না থাকায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।”

আরও একটি ঘটনায়, এক বাংলাদেশিকে ধরল হাঁসখালি থানার পুলিশ। ধৃতের নাম আশাদুল শেখ। বাড়ি বাংলাদেশের চুঁয়াডাঙা জেলার পুরাতন পালচুলা গ্রামে। শনিবার রাতে পুলিশ তাঁকে হাঁসখালির ডাঙাপাড়া এলাকার বাসিন্দা হেন্নবি মণ্ডলের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, বছর খানেক আগে চাপড়ার হাটখোলা সীমান্ত পার হয়ে তিনি ভারতে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।

ghojadanga border arrested for trying to cross border
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy