গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় সীমান্তরক্ষীদের দিকে বোমা ছোড়া এবং লাঠির ঘায়ে এক জওয়ানকে আহত করার অভিযোগে কুখ্যাত এক বাংলাদেশি দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
ধৃতের নাম রফিকুল গাজি। তার বাড়ি বাংলাদেশের কৈখালি গ্রামে। পুলিশের দাবি, কয়েক বছর আগে দুষ্কৃতীমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে বাংলাদেশের পুলিশের তাড়া খেয়ে অবৈধ ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে এ পারে চলে আসে রফিকুল। তার পরে বসিরহাটের ইটিন্ডার কলবাড়ি এলাকায় ঘাঁড়ি গাড়ে। ধৃতের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকার জাল ভারতীয় নোট আটক করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, তার বিরুদ্ধে নারী পাচার, চোরাই মোটরবাইক এবং আগ্নেয়াস্ত্র পাচারেরও অভিযোগ আছে।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোরে বসিরহাটের পানিতর সীমান্তে পাহারায় ছিলেন বিএসএফের ১৪৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কনস্টবল টি বালু। অভিযোগ, তিনি গরুপাচারে বাধা দিলে দুষ্কৃতীরা দা, বল্লম, লাঠি নিয়ে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। লাঠির আঘাতে লুটিয়ে পড়েন ওই জওয়ান। তা দেখে তাঁর সহকর্মীরা এগিয়ে এলে দুষ্কৃতীরা তাদের লক্ষ করে বোমা ছুড়তে আরম্ভ করে। বেগতিক বুঝে জওয়ানরা গুলি ছোড়ে। তাতে আহত হয় বাংলাদেশের সাতক্ষিরার বাসিন্দা লিটন মোল্লা। জখম টি বালুকে এবং লিটনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বালুকে প্রাথমিক চিকিত্সার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। লিটন কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিল। কিন্তু পালিয়েছে সেখান থেকে।
পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতীদের ওই দলেই রফিকুল ছিল। এ দিন দুপুরে সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পারে, রফিকুল জাল টাকা এক দুষ্কৃতীকে দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। এই খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে। জেরায় গরু পাচারের সময়ে বিএসএফ জওয়ানদের লক্ষ করে বোমা ছোড়া থেকে শুরু করে নারীপাচার-সহ নানা দুষ্কৃতীমূলক কাজে জড়িত থাকার কথা সে কবুল করেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। আগেও এক বার অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বসিরহাট থানার পুলিশ তাকে ধরেছিল।
সম্প্রতি গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় স্বরূপনগর সীমান্তে পাহারারত এক জওয়ানকে গুলি করে খুন করেছিল বাংলাদেশি পাচারকারীরা। কয়েক মাস আগে স্বরূপনগর সীমান্তেও এক জওয়ান বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন। গরুপাচারে বাধা দেওয়ায় স্বরূপনগরে সীমান্তরক্ষীদের কয়েকটি চৌকি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মহিলা অপহরণ এবং ধর্ষণের মতো একাধিক অভিযোগও উঠে এসেছে।