Advertisement
০৬ মে ২০২৪

টিএমসিপি-র বিক্ষোভ মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে

ভবন তৈরি না হওয়ায় এখনও ভালমতো চালুই হয়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ডায়মন্ড হারবারের মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু ফের শনিবার সেখানে উপাচার্য শমিতা সেনের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাল শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। এই নিয়ে এক মাসে তিন বার।

টিএমসিপির অবস্থান। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার।

টিএমসিপির অবস্থান। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:০৮
Share: Save:

ভবন তৈরি না হওয়ায় এখনও ভালমতো চালুই হয়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ডায়মন্ড হারবারের মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু ফের শনিবার সেখানে উপাচার্য শমিতা সেনের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাল শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। এই নিয়ে এক মাসে তিন বার।

আনুষ্ঠানিক ভাবে পঠনপাঠন চালুর আগেই গত ২৯ অগস্ট এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল টিএমসিপি। সে দিন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলে (প্রশাসনিক এবং পঠনপাঠন দেখভাল করে যে কমিটি) দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একজন প্রতিনিধি রাখা-সহ কয়েকটি দাবি জানায়। সে দিন বিস্ময় প্রকাশ করে উপাচার্য বলেছিলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় চালুর আগেই ঘেরাও হয়ে গেলাম!” ১১ সেপ্টেম্বর ফের ওই সব দাবিতে উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল টিএমসিপি। শনিবার আবার ওই কাউন্সিলে জেলার প্রতিনিধি রাখার দাবি তুলে প্রায় সওয়া এক ঘণ্টা উপাচার্যের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাল তারা। সিঁড়িতে তারা বসেও পড়ে। এ ভাবে বারবার বিক্ষোভের জেরে পঠনপাঠনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং অঙ্কুরেই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেড়ে ওঠাকে বিনষ্ট করা হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ।

উপাচার্য বলেন, “আন্দোলনকারীদের দাবি নিয়ে নীতিগত ভাবে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আগেও ওঁদের সে কথা জানিয়েছি। ওই দাবি উচ্চশিক্ষা দফতরে পাঠিয়েছি। এর বাইরে আমাদের কিছু করার নেই। যা করার এর পরে রাজ্য সরকারই করবে।”

দলেরই ছাত্র সংগঠনের এই বিক্ষোভকে যে তিনি ভাল চোখে দেখছেন না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিকাঠামো নিয়ে অনেকেই হইচই করছেন। তাদের বোঝা উচিত, শিশু ভূমিষ্ঠ হতে সময় লাগে। পূর্ব ভারতের একমাত্র মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যারা ওখানে বিক্ষোভ করছে, তাদের সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানো উচিত, বিষয়টি বোঝা উচিত।”

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “ওখানে বিক্ষোভ বা ঘেরাও হয়নি। ছাত্রছাত্রীরা হয়তো কিছু আর্জি নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু হয় এ মাসের গোড়ায়। কিন্তু এখনও ভবন তৈরি না হওয়ায় ক্লাস হচ্ছে ফকিরচাঁদ কলেজের একটি ভবনে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের সংগঠন এখনও গড়ে ওঠেনি। অথচ, তিন বার সেখানে বিক্ষোভ দেখাল ওই কলেজের টিএমসিপি-র সদস্যেরা। প্রতিবারই নেতৃত্ব দিলেন টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত সাহা। এ দিন তাঁদের আনা ব্যানারের নীচে লেখা ছিল ‘ডায়মন্ড হারবারবাসী’। সেই ব্যানারে ‘স্বৈরাচারী’ বলে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাঁর সরে যাওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।

অমিতের দাবি, “আমরা জানি, কাউন্সিলে জেলার প্রতিনিধি রাখার বিষয়টি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। তবে, চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেই প্রস্তাব উচ্চ শিক্ষা দফতরে পাঠানো হোক। কিন্তু উপাচার্য তা করছেন না।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাউন্সিলে ২২ জন সদস্য রয়েছেন। তাঁরা উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতার বাসিন্দা। তাঁদেরই সিদ্ধান্তমতো যাবতীয় নিয়োগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা হয়। কিন্তু পরিচালনা সংক্রান্ত নিয়মাবলি তৈরির কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় নানা অসুবিধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। জুলাইয়ের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা। তা হলে নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে পরিকাঠামোসব দিকেই তাঁরা নজর দিতে পারবেন বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmcp ladies university
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE