Advertisement
E-Paper

থেকেও নেই স্ট্যান্ড, দুর্ভোগে বাসযাত্রীরা

বাসস্ট্যান্ডের উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে নাজেহাল বাস শ্রমিক থেকে সাধারণ যাত্রী। পাথরপ্রতিমার ওই স্ট্যান্ডের বিষয়ে ব্লক প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসনকে জানালেও আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বেশ কয়েক বছর ধরে জেলার গ্রামীণ ও শহরতলি এলাকায় রাস্তা সংস্কার প্রকল্পে কোথাও নতুন পাকা রাস্তা, বা গ্রামে যাতায়াতের কংক্রিটের রাস্তা তৈরি হয়েছে। তাতে বাস, অটো, মোটরভ্যান যাতায়াতও করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১৬
রাস্তার পাশে এ ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে বাস।

রাস্তার পাশে এ ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে বাস।

বাসস্ট্যান্ডের উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে নাজেহাল বাস শ্রমিক থেকে সাধারণ যাত্রী। পাথরপ্রতিমার ওই স্ট্যান্ডের বিষয়ে ব্লক প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসনকে জানালেও আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বেশ কয়েক বছর ধরে জেলার গ্রামীণ ও শহরতলি এলাকায় রাস্তা সংস্কার প্রকল্পে কোথাও নতুন পাকা রাস্তা, বা গ্রামে যাতায়াতের কংক্রিটের রাস্তা তৈরি হয়েছে। তাতে বাস, অটো, মোটরভ্যান যাতায়াতও করছে। সেই মতো বছর দশেক আগে, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় কাকদ্বীপের গঙ্গাধরপুর থেকে পাথরপ্রতিমা বাজার পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার পিচ রাস্তা তৈরি হয়েছিল।

কয়েক বছর আগে পর্যন্তও ওই রাস্তায় বাস চলত না। বছর কয়েক আগে গঙ্গাধরপুর থেকে দূর্বাচটি সংযোগী সপ্তমুখী নদীর উপরে সেতু নির্মাণ হয়। তারপরেই বছর দু’য়েক ধরে কলকাতা থেকে সরাসরি পাথরপ্রতিমা এসডি-১৯ রুটের বাস চলাচল করে। ডায়মন্ড হারবার থেকে সরাসরি পাথরপ্রতিমায় যাতায়াত করে এসডি-৫০ রুটের বাস। এ ছাড়া, ওই এলাকায় এক সময়ে পাথরপ্রতিমা থেকে নদীপথ ছাড়া পৌঁছনো যেত না ভাগবতপুর, জি-প্লট, বনশ্যামনগর এলাকায়। এখন ক্রংক্রিটের রাস্তায় যাত্রী পরিষেবায় পাথরপ্রতিমা থেকে কয়েকশো মোটরভ্যান চলাচল করে।

কিন্তু মোটরভ্যান ও দু’টি রুটের বাস চালু হলেও পাথরপ্রতিমা বাস স্ট্যান্ডের কোনও পরিকাঠামোই নেই। ফলে দিনে রাতে রাস্তার উপরে সার দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয় বাসগুলি। অথচ পাথরপ্রতিমা-কলকাতা রুটে চলাচলকারী এসডি-১৯ রুটের ৩৪টি বাসের মধ্যে ১৫টি এবং পাথরপ্রতিমা-ডায়মন্ড হারবার চলাচলকারী এসডি-৫০ রুটের ২৩টির মধ্যে ১০টি বাস রাতে ওই স্ট্যান্ডে থাকে। এই ২৯টি বাসের শ’খানেক শ্রমিকের থাকার কোনও আস্তানা নেই। নেই কোনও ভাল খাবার হোটেল। এমনকী, শৌচাগার বা পানীয় জলের ব্যবস্থাটুকুও অমিল। যাত্রীদের দাঁড়ানোর জন্য কাছাকাছি শেডের ব্যবস্থা নেই।

এখানেই সমস্যা শেষ নয়। পাথরপ্রতিমা স্ট্যান্ড থেকে গঙ্গাধরপুর সেতুর মোড় পর্যন্ত রাস্তা বেহাল। বছর দু’য়েক ওই অবস্থায় থাকার পরে কিছু দিন হল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই সংস্কার চলা রাস্তায় বাসে যাতায়াত করতে যাত্রীদের নাভিশ্বাস দশা। গাড়ি চলার সময়ে প্রবল ধুলো-ধোঁয়া ঢোকে বাসের মধ্যে। ফলে দমবন্ধ করা পরিস্থিতিতে নাকে-মুখে কাপড় গুঁজে চলতে বাধ্য হন যাত্রীরা। রাস্তার পাশের বাড়িগুলির বাসিন্দা বা দোকানিদেরও এক দশা। ধুলোর মোটা আবরণ পড়েছে বাড়ির দেওয়ালে।

অথচ ওই ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে পাথরপ্রতিমা থানা, স্কুল, কলেজ ছাড়াও বিভিন্ন অফিস কাছারিতে বহু মানুষের যাতায়াত। তা ছাড়া, শীতের মরসুমে বহু পর্যটক ভাগবতপুর কুমির প্রকল্পে যান। তখনও ওই বেহাল রাস্তাই ভরসা। স্থানীয় নিত্য ও সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, স্ট্যান্ডে যাত্রী শেড না থাকায় রোদ-বৃষ্টির সময়ে দোকানের তলায় দাঁড়াতে হয়। তাতে দোকানিরাও বিরক্ত হন। এ ছাড়া, শৌচাগার বা পানীয় জলের ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বিশেষত মহিলা ও শিশুদের। স্থানীয় বাসিন্দা রামেশ্বর পাণ্ডে, তপন জানাদের অভিযোগ, “এই বাসস্ট্যান্ড বানানো থেকে রাস্তার সমস্যা সমস্ত বিষয়ে প্রশাসন সব কিছু জেনেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”

এসডি ১৯ বাসের সময়রক্ষক অরুণ গিরি বলেন, “এখানে বাসস্ট্যান্ড বলেই কিছু নেই। ফলে বাস রাখতে বা ঘোরাতে সমস্যা হয়। আমাদের যাবতীয় কাজ ফুটপাথের চায়ের দোকানে বসে করতে হয়। অন্তত একটা পানীয় জলের নলকূপ তো অবিলম্বে দরকার। এ দিকে, রাস্তার সংস্কারের কাজ সবে শুরু হয়েছে, কবে শেষ হবে সেই অপেক্ষায় আছি। একাধিকবার পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ব্লক প্রশাসনকে আমাদের সমস্যার কথা জানানো হয়েছে।”

পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি শেখ রাজ্জাক বলেন, “ওই স্ট্যান্ডের কাছে ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শৌচাগার নির্মাণ হয়েছে। তবে এখনও চালু করা হয়নি। বাকি সমস্যাগুলির আস্তে আস্তে সমাধান করা হবে।” বিডিও কিশোর বিশ্বাস বলেন, “ওই বাসস্ট্যান্ড থেকে কিছুটা এগিয়ে যাত্রী শেড ও পানীয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বাস দাঁড়ানোর স্ট্যান্ড তৈরির জমি পাওয়া গেলেও এখনও কাজ শুরু করা যায়নি।”

ছবি: দিলীপ নস্কর।

southbengal patharpratima harassment bus stand
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy