Advertisement
E-Paper

দরজা ভেঙে ঢুকে অন্তঃসত্ত্বাকে মার, লুঠ

স্বামী আর চার বছরের মেয়ে নিয়ে সে দিনই বাপের বাড়িতে এসেছিলেন অন্তঃসত্ত্বা তরুণী। ভয় পেয়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করলে লোকগুলো চুলের মুঠি ধরে হেঁচড়ে তাঁকে ঘরে টেনে আনে। রিভলভার ঠেকিয়ে দেয় তাঁর স্বামীর মাথায়। তরুণী হাতজোড় করে বলতে থাকেন, তিনি অন্তঃসত্ত্বা, তাঁকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। মা-বাবাকে মার খেতে দেখে তাঁদের চার বছরের মেয়ে গিয়ে এক দুষ্কৃতীর পা জড়িয়ে ধরে চিৎকার করতে থাকে “ছেড়ে দাও, আমার বাবা-মাকে ছেড়ে দাও...।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৯
জখম অরুণ অধিকারী।—নিজস্ব চিত্র।

জখম অরুণ অধিকারী।—নিজস্ব চিত্র।

মাঝরাতে বাড়ির কড়া নেড়ে ধমকের সুরে লোকগুলো বলেছিল ‘আমরা পুলিশ, দরজা খোল!’

দরজা ধাক্কানোর শব্দে বাড়ির সকলের ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু, এত রাতে পুলিশ কেন? সন্দেহ হওয়ায় বাড়ির কর্তা মোবাইলে পড়শিদের ডাকার চেষ্টা করেন। আর তখনই দরমার ঘরের দরজা ভেঙে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে চার-পাঁচ জন।

স্বামী আর চার বছরের মেয়ে নিয়ে সে দিনই বাপের বাড়িতে এসেছিলেন অন্তঃসত্ত্বা তরুণী। ভয় পেয়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করলে লোকগুলো চুলের মুঠি ধরে হেঁচড়ে তাঁকে ঘরে টেনে আনে। রিভলভার ঠেকিয়ে দেয় তাঁর স্বামীর মাথায়। তরুণী হাতজোড় করে বলতে থাকেন, তিনি অন্তঃসত্ত্বা, তাঁকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। মা-বাবাকে মার খেতে দেখে তাঁদের চার বছরের মেয়ে গিয়ে এক দুষ্কৃতীর পা জড়িয়ে ধরে চিৎকার করতে থাকে “ছেড়ে দাও, আমার বাবা-মাকে ছেড়ে দাও...।”

বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় হাদিপুর-ঝিকরা ২ পঞ্চায়েতের জামালপুর গ্রামে ওই হামলায় প্রথমে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন মাঝেরপাড়ার অরুণ ওরফে পচা অধিকারী। কিন্তু মেয়ে-জামাইকে মার খেতে দেখে তিনি রুখে ওঠেন। বাধা পেয়ে এক জন তাঁর দু’হাতে কাটারির কোপ বসিয়ে দেয়। এক জন রিভলভারের বাড়ি মারে মাথায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

লুঠপাট শুরু হয়ে যায়। বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, অরুণবাবুর স্ত্রী এবং বৃদ্ধা মাকে মারধর করে হার, দুল, বালা কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। শোকেস ভেঙে নগদ কয়েক হাজার টাকাও হাতিয়ে নেয়। তারই মধ্যে জখম অরুণবাবু কোনও রকমে বাইরে বেরিয়ে চিৎকার শুরু করেন। তা শুনে গ্রামের লোকজন বেরিয়ে এলে দু’টি বোমা ছুড়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। সেই বোমা অবশ্য ফাটেনি। কিন্তু গ্রামের লোকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

রাতেই দেগঙ্গা থানার পুলিশ গ্রামে আসে। অরুণবাবুকে প্রথমে হাড়োয়া হাসপাতাল, পরে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার এসডিপিও (বারাসত) সুবীর চট্টোপাধ্যায় তদন্তে আসেন। অরুণবাবুর অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে বিন্দু তাঁকে বলেন, “ওদের হাতে-পায়ে ধরে কাকুতিমিনতি করেছিলাম। কিন্তু ওরা কিচ্ছু শুনতে চায়নি।” দ্রুত অপরাধীদের ধরা হবে বলে পুলিশ তাঁদের আশ্বাস দেয়। কিন্তু শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি।

পরিবার সূত্রের খবর, অরুণবাবু শিকড়বাকড় বিক্রির কারবার করেন। দেগঙ্গার ওসি পলাশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দুষ্কৃতীরা ডাকাতি করতে এসেছিল না কোনও পুরনো বিবাদের জেরে এই হামলা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” অরুণবাবু অবশ্য দাবি করেন, “আমার সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা নেই। পুলিশ দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করুক।”

deganga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy