উন্নত প্রযুক্তির মেশিনের সাহায্যে কম খরচে এবং কম সময়ের মধ্যে কী ভাবে ধান চাষ করা যায়, দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর গ্রামে তা হাতে কলমে দেখালেন কৃষি আধিকারিকেরা।
তাঁদের দাবি, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে এক বিঘা জমিতে বীজ ধান রোপণ করা সম্ভব। কাজের লোকের অভাব হলে এই মেশিন কৃষকদের অনেক উপকারে আসবে। কৃষকদের সুবিধার জন্য প্রায় ২ লক্ষ টাকার এই মেশিন কিনলে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা সরকারি ভর্তুকি মিলবে। জেলা কৃষি আধিকারিকদের দাবি, এক দিকে ধান চাষের ক্ষেত্রে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনই কৃষি শ্রমিক পেতেও সমস্যা হচ্ছে। এ সবের জেরে বীজ রোপণে দেরি হওয়ায় ফলন কমছে। রোগ পোকার আক্রমণও বাড়ছে।
জেলা কৃষি আধিকারিকেরা মনে করেন, সরকারি খামারে ধান রোপণ মেশিনের ব্যবহারে ধান বীজ রোপণে বড় সুফল মিলেছে। তাঁরা জানান, চলতি বছরে দেগঙ্গা, বাদুড়িয়া, হাবরা, আমডাঙা ও বসিরহাটে প্রায় আড়াইশো বিঘা জমিতে এই মেশিন দিয়ে বীজ রোপণ করা হয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই ভাল ফল পাওয়া গিয়েছে।
বসিরহাট মহকুমা কৃষি আধিকারিক শঙ্কর দাস জানান, মেশিনটির গুণাগুণ জানানোর জন্য নিজেদের প্রচেষ্টায় আগ্রহী চাষিদের জমিতে নিয়ে গিয়ে হাতেকলমে মেশিনের ব্যবহার দেখানো হচ্ছে।
দেগঙ্গা ব্লকের সোহাই গ্রামের সনাতন বিশ্বাস, লিয়াকত আলিরা বলেন, “আমরা যন্ত্র ব্যবহার করে ধানের বীজ পুঁতেছিলাম। এখন তফাত বুঝতে পারছি। একই সঙ্গে সাধারণ ভাবে বীজ রোপণ করে যেখানে ধানের কাঠি ১৫-১৬টি পেয়েছি, সেখানে মেশিনে রোপণের ক্ষেত্রে ৩০-৩৫টি কাঠি ফলেছে। ফলে উৎপাদন বেড়েছে।” বসিরহাটের খালেদ মোল্লা, কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “কম সময়ে কম টাকায় বেশি জমিতে ধানের বীজ রোপণের সুবিধাও হচ্ছে।”
দেগঙ্গা ব্লক সহ কৃষি আধিকারিক দীপক বিশ্বাস জানান, এক দিনে ৮ বিঘা জমিতে এই যন্ত্র দিয়ে ধানের বীজ রোপণ করতে প্রায় ২ হাজার টাকা। ওই পরিমাণ জমিতে চিরাচরিত প্রথায় বীজ রোপণ করতে লাগে ৩২ জন কাজের লোক। যার খরচ অন্তত ৭ হাজার টাকা। তা ছাড়া, সময় মতো কাজের লোক না পাওয়া গেলে ধান রোপণে দেরি হওয়ায় রোগ পোকার আক্রমণ বৃদ্ধি পায়। ফলন কমে। মেশিনে কাজ করলে অনন্ত ১৫ শতাংশ ফলন বৃদ্ধি পায়। জেলার উপকৃষি অধিকর্তা অরূপ বিশ্বাস বলেন, “রাজ্য সরকার যন্ত্র ব্যবহার করে উৎপাদন বৃদ্ধির যে পরিকল্পনা নিয়েছেন, এটি তারই অঙ্গ।”