পুলিশের কাছে খবর আসে, বিয়ে হচ্ছে নাবালিকার। পুলিশ গিয়ে দেখে, তত ক্ষণে অতিথি-অভ্যাগতেরা আসতে শুরু করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় বিয়ের আয়োজন তখন প্রায় শেষ। কিন্তু শেষ রাতে পুলিশ কর্মীদের দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান বাড়ির লোকজন। আঠারো বছর না হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া আইনসিদ্ধ নয় বলে মেয়ে পক্ষকে বোঝান বাগদার ওসি গোপাল বিশ্বাস। নিমরাজি হয়ে শেষমেশ সে কথা মেনেও নেন মেয়ের বাবা। বিয়ে বন্ধ না করলে গ্রেফতার করা হবে সকলকে, এমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সিংহি গ্রামে ওই নাবালিকার বিয়ে নিয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন কিছু লোক। পুলিশ জানায়, মেয়েটি পড়ে নবম শ্রেণিতে। মেয়ের বাবা পেশায় কাঠ মিস্ত্রি। হতদরিদ্র পরিবার। মেয়ের বিয়ের ঠিক হয়েছিল নদিয়ার ধানতলা থানার দত্তফুলিয়া এলাকার বরণবেড়িয়া গ্রামের পাত্রের সঙ্গে। পুলিশ দু’পক্ষের সঙ্গেই কথা বলে। পুলিশ গিয়ে বিয়ে বন্ধের নির্দেশ দিলেও মেয়ের বাড়ি থেকে স্থানীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হয়, যাতে বিয়েটা হয়ে যায়। কিন্তু সকলেই জানিয়ে দেন, বেআইনি এই ব্যাপারে তাঁরা কোনও ভাবে মেয়ের পরিবারের পাশে থাকতে পারবেন না।
বৃহস্পতিবার সকালে মেয়ের বাবাকে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। ওসি গোপালবাবু দীর্ঘ ক্ষণ ধরে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। বোঝান, আইনের দিক থেকে তো বটেই, আঠারো বছরের কমে মেয়ের বিয়ে দিলে তার শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিও হতে পারে। মেয়ের বাবা-মা পুলিশকে জানান, তাঁরা খুবই গরিব। বিয়ের আয়োজন করতে প্রচুর টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। তবে তাঁরা পুলিশকে কথা দিয়েছেন, মেয়েকে লেখাপড়া করাবেন। প্রাপ্তবয়স্ক না হলে তার বিয়ে দেবেন না। পুলিশও জানিয়েছে, কোনও রকম সাহায্যের প্রয়োজন হলে পরিবারটি যেন যোগাযোগ করে। আঠারো বছরের কমে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যে আইনসিদ্ধ নয়, তা তাঁরা জানতেন না বলে দাবি করেছেন মেয়ের বাবা-মা। এ দিন মেয়েটি জানিয়েছে, সে আরও লেখাপড়া করতে চায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy