অবহেলায় নষ্ট হওয়ার মুখে। —নিজস্ব চিত্র।
বছরের পর বছর তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হতে বসেছে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি ফলতার অতিথিনিবাস। সরকারি খরচে তৈরি দ্বিতল ভবনটি রক্ষণাবেক্ষণের কোনও বালাই নেই। সরকারি অতিথিনিবাসের এমন হাল হলেও অদূরে গঙ্গার ধারেই রমরম করে চলছে বেসরকারি অতিথিনিবাস। অপেক্ষাকৃত কম খরচে অতিথিদের থাকার সুযোগ দিয়ে সরকারের এই নিবাস থেকে জেলা পরিষদের আয়ের সুযোগ থাকলেও সে বিষয়ে কোনও হেলদোল নেই কর্তৃপক্ষের। ফলতায় গঙ্গার অদূরে অতিথিনিবাসে প্রতি তলে চারটি করে ফ্ল্যাট। প্রায় ছ’কাঠা জমির উপর ভবনটি তৈরি করে জেলা পরিষদ। কিন্তু তৈরির পর বহু বছর কেটে গেলেও ভবনটির মেরামতি হয়নি। বেশিরভাগ জানলার কাচ ভেঙে গিয়েছে। দেওয়াল ফেটে গিয়ে বিভিন্ন অংশে শ্যাওলা ধরেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর কুড়ি আগে বাম সরকারের আমলে অতিথি নিবাসটি তৈরি হয়। কিন্তু তার এমন হাল কেন? উত্তর দিতে পারলেন না জেলা পরিষদের প্রয়াত কর্মী হৃদয় প্রামাণিকের ছেলে কেয়ারটেকার দিলীপ প্রামাণিক। তিনি বলেন, “বাবার মৃত্যুর পর থেকে জেলা পরিষদের কর্তাদের কথায় বিনা বেতনে অস্থায়ী কেয়ারটেকার হিসাবে কাজ করছি। বহুবার চাকরিতে স্থায়ীকরণের জন্য ওঁদের জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সাড়া পাইনি।” তাঁর দাবি, জেলা পরিষদের কর্তারা অতিথিনিবাসের এমন অবস্থার কথা জানেন।
অতিথি নিবাস থেকে মিনিট আটেক হাঁটাপথে গঙ্গার ধারে চারতলা সুদৃশ্য বেসরকারি হোটেল। সেখানকার এক কর্মী জানান, শীতের মরশুমে এখানে ঘরের বিপুল চাহিদা। ওয়েবসাইটেই পর্যটকেরা আমাদের খোঁজ পান। দৈনিক ঘরের ভাড়া ২৭০০ থেকে ৪৫০০ টাকা। যেখানে পর্যটকের এমন চাহিদা সেখানে সরকারি অতিথি নিবাসটিকে এ ভাবে ফেলে রাখার প্রশ্নে জেলা পরিষদের কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক অলকেশ প্রসাদ রায়ের জবাব, “এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।”
জেলা পরিষদের সভাধিপতি শেখ শামিমা বলেন, “২০০৮ সালে আমরা দায়িত্বে এসেছি। তার আগে থেকেই দেখছি বাড়িটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। আমরা একবার ভেবেছিলাম বাড়িটি মেরামত করে পর্যটকদের জন্য দেওয়া হবে। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।” তবে একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ওই ভবনটির পাশেই মৎস্য দফতরের একটি প্রকল্প হচ্ছে। সে জন্য অফিসের প্রয়োজন। সেই কাজে পরিত্যক্ত ভবনটিকে ব্যবহার করা যেতে পারে। দেখা যাক কী হয়!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy