Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল বসিরহাটের বিভিন্ন গ্রাম

ভরা কোটালে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে জল বাড়ায় বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকল বসিরহাটের বিভিন্ন গ্রামে। সোমবার দুপুরে হাসনাবাদ, বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁ এবং সন্দেশখালির বিভিন্ন গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্লাবন দেখা দিয়েছে। জল ঢুকে দেওয়ায় ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি স্কুলেও। বসিরহাট ১ ব্লকের শাঁকচুড়ো বাগুন্ডির বাঁশঝাড়ি-মল্লিকপুর এলাকায় ইটভাটার জন্য কাটা খালের বাঁধ ভেঙে তিনটি গ্রামে নোনা জল ঢুকেছে।

নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হিঙ্গলগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা। জল দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও। ছবি: নির্মল বসু ও দিলীপ নস্কর।

নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হিঙ্গলগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা। জল দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও। ছবি: নির্মল বসু ও দিলীপ নস্কর।

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০১:২১
Share: Save:

ভরা কোটালে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে জল বাড়ায় বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকল বসিরহাটের বিভিন্ন গ্রামে।

সোমবার দুপুরে হাসনাবাদ, বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁ এবং সন্দেশখালির বিভিন্ন গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্লাবন দেখা দিয়েছে। জল ঢুকে দেওয়ায় ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি স্কুলেও।

বসিরহাট ১ ব্লকের শাঁকচুড়ো বাগুন্ডির বাঁশঝাড়ি-মল্লিকপুর এলাকায় ইটভাটার জন্য কাটা খালের বাঁধ ভেঙে তিনটি গ্রামে নোনা জল ঢুকেছে। মিনাখাঁর মোহনপুরে একশো ফুটের বেশি দীর্ঘ নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, ‘‘মহকুমার বেশ কয়েকটি এলাকায় নদী বাঁধ ধসে গিয়ে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু যেখানে নদী সংলগ্ন ইটভাটা এবং মেছো ভেড়ি রয়েছে, সে সব জায়গায় জল না কমা পর্যন্ত মেরামতির কাজ করা যাচ্ছে না। প্রতিটি ব্লক আধিকারিকদের কাছে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজন পড়লে প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের তা দেওয়া হবে।’’

মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’দিন ধরে বসিরহাট ১ ব্লকের শাঁকচুড়ো বাগুণ্ডির বাঁশঝাড়ি-মল্লিকপুর এলাকায় ইছামতী থেকে কাটা খালের বাঁধ ভেঙে গজালমারি, বাঁশঝাড়ি-মল্লিকপুর, সোলাদানা এবং নলকোডার একাংশ প্লাবিত হয়।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কেবল মাত্র ইটভাটা করার জন্যই গ্রামের মধ্যে ইছামতী নদী থেকে প্রায় এক কিলোমিটার খাল কাটা হয়েছে। ওই খালের বাঁধ ভেঙে দু’দিন ধরে গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। অথচ বাঁধ মেরামতি করা তো দূর, প্লাবিত এলাকার মানুষের অবস্থার কোনও খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি প্রশাসন বা স্থানীয় নেতারা।

গ্রামবাসী আকবর আলি মোল্লা, রবিউল গাজিরা বলেন, ‘‘টাকা নিয়ে ইটভাটার মালিকদের গ্রামের মধ্যে খাল কাটতে দেওয়া হয়েছিল। তার ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের। সারা দিন রোজা রাখার পরে রাতে একটু রান্না করার চুলো ধরানোরও জায়গা নেই। এখনও পর্যন্ত বাঁধ মেরামত বা ত্রাণ দেওয়ার কোনও উদ্যোগই আমরা দেখতে পাইনি।’’

হাসনাবাদের আংনাড়া, ট্যাংরামারিতেও নদীবাঁধ ভেঙেছে। শুখদুয়ানি স্কুলে জল ঢুকে যাওয়ায় এ দিন ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।

মিনাখাঁর বাছড়া মোহনপুর গ্রামে বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ ভেঙে বেশ কিছু বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করার চেষ্টা হলেও তা রীতিমত কঠিন হয়ে পড়ে। কয়েকটি জায়গায় ফসলি জমিতেও জল ঢুকেছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।

হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ এবং সন্দেশখালির কালিনগরে বেতনি নদীর বাঁধ উপচে নোনা জল ঢুকেছে। সন্দেশখালির আতাপুর বাজারের কাছে রায়মঙ্গল নদীর উপর প্রায় প্রায় তিনশো ফুট বাঁধ ধসে গিয়ে গ্রামে জল ঢুকেছে। স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল পড়ুয়া বলেন, ‘‘নদীর জল যে ভাবে বাড়ছে তাতে দ্রুত বাঁধ সংস্কারের ব্যবস্থা না নিলে কোড়াকাটি এবং মনিপুরের অনেকটা জায়গা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তালতলা এলাকার বাঁধের অবস্থাও যথেষ্ট খারাপ।’’

এছাড়াও এলাকার নদী সংলগ্ন বাজারগুলিতে জল ঢুকে পড়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal nirmal basu hingalganj flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE