Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেও রাস্তা সারাই হল না, হতাশ গোসাবা

শীত পড়তেই সুন্দরবনে শুরু হয়েছে পর্যটকদের যাতায়াত। কিন্তু রাস্তাঘাটের হাল তেমন ফেরেনি। ফলে এক দিকে যেমন সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ, পর্যটকদেরও হয়রান হতে হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় গোসাবা থেকে পাখিরালা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা এবং গোসাবা থেকে জটিরামপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:২৩
গোসাবা থেকে পাখিরালা যাওয়ার পথের দশা। ছবি: সামসুল হুদা।

গোসাবা থেকে পাখিরালা যাওয়ার পথের দশা। ছবি: সামসুল হুদা।

শীত পড়তেই সুন্দরবনে শুরু হয়েছে পর্যটকদের যাতায়াত। কিন্তু রাস্তাঘাটের হাল তেমন ফেরেনি। ফলে এক দিকে যেমন সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ, পর্যটকদেরও হয়রান হতে হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় গোসাবা থেকে পাখিরালা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা এবং গোসাবা থেকে জটিরামপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল। কংক্রিটের তৈরি রাস্তায় বড় বড় চাঙড় উঠে গিয়েছে। প্রায়শই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় মানুষের আশা ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে হয় তো রাস্তা সারানো হবে। কিন্তু সে গুড়ে বালি। আজ, সোমবার সুন্দরবনে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাস্তার হাল ফেরেনি তার আগেও।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ক’দিন আগেই পাখিরালা থেকে ফেরার সময়ে মোটর ভ্যান উল্টে পা ভাঙে এক পর্যটকের। গোসাবা থেকে সড়ক পথে মোটর ভ্যান, রিকশা কিংবা অটোতে পাখিরালা, সজনেখালি, বুড়িরদাবড়ি প্রভৃতি জায়গায় যান পর্যটকেরা। কিন্তু যাতায়াতের অন্যতম রাস্তা দু’টির অবস্থাই খারাপ। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করতে পারলেন না, শেষ কবে সংস্কার হয়েছিল রাস্তা দু’টি।

বিভিন্ন সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় আছে গোসাবায়। প্রতি দিনই নানা কাজে ওই রাস্তা দু’টি দিয়ে বহু মানুষের যাতায়াত। নদীপথেও অনেকে আসেন গোসাবায়। গোসাবা হাসপাতালে বহু দূরদূরান্ত থেকে রোগীকে আনা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, এই রাস্তায় চলাচল করা রোগীদের পক্ষে খুবই অসুবিধার। প্রসূতিরাও আসেন এই হাসপাতালে। ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে তাঁদের খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। স্থানীয় মানুষের দাবি, প্রশাসনের সর্বস্তরে জানানো সত্ত্বেও রাস্তা সারানো হচ্ছে না। এক দিকে যেখানে সরকার সুন্দরবনে পর্যটনের প্রসারের কথা ভাবছে, সেখানে যাতায়াতের রাস্তা ভাল করা হচ্ছে না কেন, তা নিয়ে বিস্মিত এলাকাবাসী। ক্ষোভও জমছে। স্থানীয় মানুষের আরও অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে তড়িঘড়ি পাখিরালার জেলা পরিষদের বাংলো পর্যন্ত যাওয়ার ইটের রাস্তা ঢালাই করা হল। এ ছাড়াও, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে যেখানে যাবেন, সে সব জায়গায় রাস্তা সারানো হচ্ছে। জেটিঘাটে লাইট লাগানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। এমনকী, সরকারি অফিসগুলিও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রঙ করা হচ্ছে। বাসন্তীর ঝড়খালি, গোসাবা এবং জেমসপুরে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারের জন্য হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে। কিন্তু এত সব সত্ত্বেও জরুরি দু’টি রাস্তা সারানোর কথা প্রশাসনের মনে পড়ল না, অভিযোগ বাসিন্দাদের।

সুন্দরবন নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সফর বলে কথা! সেই কারণে চার দিকে সাজো সাজো রব। সরকার সুন্দরবনে পর্যটনের প্রসারের কথা বলছে। সে ক্ষেত্রে পর্যটকদের কথা মনে রেখে অন্তত গোসাবার দু’টি রাস্তা সংস্কার করা উচিত ছিল। আমরা প্রশাসনের সর্বস্তরে আবেদন-নিবেদন করেও কোনও সাড়া পাইনি।” অবিলম্বে রাস্তা দু’টি সংস্কার না হলে তাঁরা সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন চন্দনবাবু।

রাস্তা দু’টির হাল যে খারাপ, সে কথা মেনে নিয়েছেন ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য। তিনি বলেন, “সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েছি, দ্রুত রাস্তা মেরামত করার জন্য। যত দূর জানি, রাস্তা সংস্কারের জন্য সার্ভে হয়ে গিয়েছে। আশা করি, দ্রুত কাজ শুরু হবে।”

এ বিষয়ে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরার বক্তব্য, “গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর রাস্তা দু’টি সারাইয়ের ব্যাপারে আমাকে জানিয়েছেন। আমি দফতরের আধিকারিকদের বলেছি, পর্যটকদের স্বার্থে দ্রুত রাস্তা সংস্কার করা হোক।”

gosaba road deplorable condition southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy